আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি -সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

Language : Bengali

1. “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি”-কবিতাটির উৎস লেখ। 

⇒ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থের একত্রিশ সংখ্যক কবিতা। 

2. কবিতা অনুসারে আমাদের ডানে-বায়ে, ওপর ও নীচে কী আছে ?

⇒ ডানপাশে -ধ্বস, বামে - গিরিখাদ, ওপরে - বোমারু এবং নীচে রয়েছে হিমানীর বাঁধ। 

3. ‘আমাদের পথ নেই কোনো’ -কেন ?

⇒ আমাদের চারপাশে বিবিধ সমস্যা থাকায় একথা বলা হয়েছে। 

4. ‘এ মুহূর্তে মরে যাব না কি ?’- এই আশঙ্কা কেন ?

⇒সাধারণ মানুষের চলার পথ অবরুদ্ধ, তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে গেছে, শিশুরা মারা গেছে অপুষ্টি ও রোগে। তাই এমন পরিস্থিতিতে তাদেরও বেঁচে থাকাটা অনিশ্চিত, এজন্যই এই আশঙ্কা। 

5. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ - কেন ?

⇒ অবক্ষয়িত সমাজে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিহত করতে একতা একান্ত প্রয়োজন। এজন্যই একথা বলেছেন। 

6. ‘আমাদের ইতিহাস নেই’ -কেন ?

⇒ সাধারণ বঞ্চিত মানুষের দুঃখ, কষ্ট, বঞ্চনার কথা ইতিহাসে স্থান পায় না। অথবা, সেই ইতিহাসে প্রকৃত সত্যকে গোপন রাখা হয়। তাই আক্ষেপের সঙ্গে কবি একথা বলেছেন। 

7. ‘আমাদের কথা কে -বা জানে’ - কেন এইরূপ উক্তি ?

⇒ আত্মসর্বস্বতার যুগে সাধারণ মানুষের দুঃখ -দুর্দশার কথা কেউ খোঁজ রাখে না। তাই একথা বলা হয়েছে। 

8. বিপন্ন মানুষের ঘর কীভাবে উড়ে গেছে ?

⇒ যুদ্ধ, দাঙ্গা, রাজনৈতিক সন্ত্রাসে বিপন্ন মানুষের ঘর বা মাথার ওপর আচ্ছাদন ধ্বংস হয়েছে। 

9. ‘পৃথিবী হয়তো গেছে মরে’ - এরূপ আশঙ্কা কেন করেছেন ?

⇒ সাধারণ মানুষের বিপন্নতার কথা, সর্বস্ব হারানোর কথা কেউ মনে রাখে না। একটু আশ্রয়, একটু খাদ্যের জন্য সর্বহারাদের বারোমাস ভিখারি হয়ে থাকতে হয়। মানুষের পাশে আজ দাঁড়ানোর কেউ নেই বলে এইরূপ আশঙ্কা করেছেন। 

10. ‘তবু তো কজন আছি বাকি’ -তাৎপর্য লেখ। 

⇒ কবি লক্ষ্য করেছেন সমাজের স্বার্থান্বেষীরা মানুষের বাঁচার পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। অবক্ষয়িত সমাজে তারা নানাভাবে বিপন্ন, তাদের এগানোর পথ যেমন রুদ্ধ তেমনই তাদের ভবিষ্যতও ধ্বংস হতে চলেছে। এই প্রতিকূলতার মধ্যে যেকজন নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পেরেছে কবি তাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন। 

11. এই কবিতায় সাধারণ মানুষের বিপন্নতার কোন ছবি ফুটে উঠেছে ?

⇒ এই কবিতায় কবি সমাজের স্বার্থান্বেষী মানুষের দ্বারা ঘটে চলা শোষনের কথা বলেছেন। উল্লেখ করেছেন তাদের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ। মাথার ওপর নেই কোনো নিরাপদ আচ্ছাদন চারদিকে ছড়ানো রয়েছে শিশুদের শব। অর্থনৈতিকভাবে রিক্ত এই সকল মানুষ সাহায্যের আশায় দরজায় দরজায় ঘুরছে। প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষ আজ নিজেদের জীবন সম্বন্ধে সন্দিগ্ধ।  কবি তাই প্রশ্ন করেছেন এই মুহূর্তে মরে যাব নাকি। 

 

12. এই কবিতার তাৎপর্য অনুসঙ্গসহ  বিচার কর। 

⇒ কবিতায় ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কথাটি দুবার ব্যবহৃত হয়েছে দুটি স্তবকে। 

কবিতায় প্রথম স্তবকে অবক্ষয়িত সমাজ ব্যবস্থার কথা ব্যক্ত হয়েছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক শোষণে সাধারণ মানুষ বিপন্ন। তাদের চলার পথ রুদ্ধ। ডানে, বামে, ওপরে, নীচে সর্বত্র বিপদ, বাঁধা। যে শিশুদের মধ্য দিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন, বাস্তবে রূপ পাওয়ার কথা - সেই শিশুদের শব তাদেরই চারদিকে ছড়ানো। এই অবস্থায় তাদের মনে সংশয় জাগে-’এই মুহূর্তে মরে যাব নাকি’.

দ্বিতীয় স্তবকে কবির একইরকম আহবান শোনা যায়। কবি লক্ষ্য করেছেন এই সমস্ত বিপন্ন সাধারণ মানুষ আত্মবিশ্বাসে অভাববোধ করে। কারন ইতিহাস নেয় অথবা তাদের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। এইজন্যই রিক্ত মানুষ অন্যের দরজায় ঘোরাঘুরি করে। এই সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শোষণে বলি যে কজন মানুষ এখনও টিকে রয়েছে তাদের নিয়েই কবি প্রতিরোধে ডাক দিয়েছেন। প্রথম স্তবকে আহ্বানের চাইতে আরো বেশি পারস্পরিক সহযোগিতার বন্ধন দৃঢ় করে হাতে হাত রেখে একত্রিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ কবি আশা করেছেন সামাজিক প্রতিকূলতায় যে কজন টিকে আছে তারাই সম্মিলিতভাবে নিজেদেরকে বিপদমুক্ত করতে পারবে। 


Ratings
No reviews yet, be the first one to review the product.
Click to send whatsapp message
Copywrite 2024 by  Misiki Technologies LLP