১. “ওয়ার্ল্ড রির্সোটস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিস ”বইটি কার লেখা ?

“ওয়ার্ল্ড রির্সোটস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিস ”বইটি অধ্যাপক E.W.Z Immerman .

2. নিরপেক্ষ উপাদান কাকে বলে ?

প্রকৃতিতে যেসব বস্তু মানুষের উপকার বা অপকার না করে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, তা হল নিরপেক্ষ উপাদান।

৩. একটি সাংস্কৃতিক সম্পদের উদাহরণ দাও।

একটি সাংস্কৃতিক সম্পদের উদাহরণ হল মানুষের বুদ্ধি।

৪. একটি একমাত্র লোভ্য বা অদ্বিতীয় সম্পদের নাম লেখো।

একটি একমাত্র লোভ্য বা অদ্বিতীয় সম্পদের নাম হল ক্রায়োলাইট।

৫. সামাজিক সম্পদের উদাহরণ দাও।

সামাজিক সম্পদের উদাহরণ হল বিদ্যালয় ও পাঠাগার।

৬. প্রতিরোধ কী ?

মানুষ কিংবা প্রকৃতি সম্পদ আহরণ ও সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে সেই বাধাকে প্রতিরোধ বলে। যেমন - ঝড়,বন্যা,সাইক্লোন,বহুমিকম্প ইত্যাদি।

৭. কয়েকটি ধাতব খনিজ দ্রব্যের নাম লেখো।

কয়েকটি ধাতব খনিজ দ্রব্যের নাম হল -লোহা ,নিকেল ও দস্তা।

৮. কয়েকটি অধাতব খনিজ দ্রব্যের নাম লেখো।

কয়েকটি অধাতব খনিজ দ্রব্যের নাম হল -কয়লা ,খনিজতেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি।

৯. লোহার আকরিক গুলির নাম লেখো।

লোহার আকরিক গুলির নাম হল - ম্যাগনেটাইট,হেমাটাইট,লিমোনাইট ও সিডারাইট।

১০. কাকে কেন লোড স্টোন বা প্রাকৃতিক চুম্বক বলা হয় ?

ম্যাগনেটাইট হল সর্বোৎকৃষ্ট আকরিক। এই প্রকার আকরিকের রং কালো এবং এতে শতকরা প্রায় 75 ভাগ লোহা থাকে। একে প্রাকৃতিক চুম্বক বলে।

১১. আকরিক লোহা উৎপাদনে ভারত বিশ্বে কত তম স্থান অধিকার করেছে ?

আকরিক লোহা উৎপাদনে ভারত বিশ্বে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।

১২. আকরিক লোহা উৎলোনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে ?

আকরিক লোহা উৎলোনে ভারতের ওড়িশা রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

১. কার্বনের উপস্থিতির ভিত্তিতে কয়লাকে কভাগে ভাগ করা যায় ? ও কী কী ?

কার্বনের উপস্থিতির ভিত্তিতে কয়লাকে চার ভাগ করা যায়।

যথা - i)অ্যানথ্রাসাইট ii)বিটুমিনাস iii)লিগনাইট iv)পিট

২. সবচেয়ে উন্নতমানের কয়লা কোনটি ?

সবচেয়ে উন্নতমানের কয়লা হল অ্যানথ্রাসাইট।

৩. ভারতের কোথায় কোথায় গন্তোয়ালা কয়লা পাওয়া যায় ?

ভারতের ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি জায়গায় কয়লা পাওয়া যায়।

৪. ভারতের কোথায় কোথায় টার্সিয়ারি কয়লা পাওয়া যায় ?

ভারতের অসম,অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড প্রভৃতি জায়গায় টার্সিয়ারি কয়লা পাওয়া যায়।

৫. ভারতের কোথায় অ্যানথ্রাসাইট কয়লা পাওয়া যায় ?

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অ্যানথ্রাসাইট কয়লা পাওয়া যায়।

৬. ভারতের বৃহত্তম লিগনাইট কয়লা খনি কোনটি ?

ভারতের বৃহত্তম লিগনাইট কয়লা খনি হল দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের নেভেল।

৭. কয়লার কয়েকটি উপজাত দ্রব্যের নাম লেখো ?

কয়লার কয়েকটি উপজাত দ্রব্যের নাম হল - আলকাতরাম, কোলগ্যাস, হাইড্রোকার্বন, অ্যামোনিয়া প্রভৃতি।

৮. কয়লা উৎপাদনে ভারত বিশ্বে কততম স্থান অধিকার করেছে ?

কয়লা উৎপাদনে ভারত বিশ্বে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।

৯. কয়লা উত্তোলনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে ?

কয়লা উত্তোলনে ভারতের ঝাড়খন্ড প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

১০. ভারতের বৃহত্তম কয়লা খনির নাম কী ?

ধানবাদ জেলার ঝরিয়া হল ভারতের বৃহত্তম কয়লা খনি।

১১. ভারতের প্রাচীনতম কয়লা খনির নাম কী ?

ভারতের প্রাচীনতম কয়লা খনি হল মাকুম।

১২. পেট্রোলিয়াম শব্দের অর্থ কী ?

পেট্রোলিয়াম শব্দের অর্থ খনিজ তেল। পেট্রো অর্থাৎ শিলা এবং ওলিয়াম শব্দের অর্থ তেল।

১৩. কাকে তরল সোনা বলা হয় ?

খনিজ তেলকে তরল সোনা বলা হয়।

১৪. খনিজ তেলের কয়েকটি উপজাত দ্রব্যের নাম লেখ।

খনিজ তেলের কয়েকটি উপজাত দ্রব্য হল - জ্বালানি তেল, বিটুমেন, লুব্রিকেটিং, প্যারাফিন, পেট্রোরাসায়ন, সালফার।

১৫. ভারতের বৃহত্তম খনিজ তেল উৎলোনের নাম লেখ।

ভারতের বৃহত্তম খনিজ তেল উৎলোনের নাম হল -বম্বে হাই।

১৬. ONGC -এর পুরো কথা কী ?

ONGC -এর পুরো কথা -Oil and Natural Gas Corporation.

১৭. ONGC -এর সদর দপ্তর কোথায় ?

ONGC -এর সদর দপ্তর - দেরাদুন।

১৮. OIL -এর পুরো কথা কী ?

OIL -এর পুরো কথা হল -Oil India Limited

১৯. OIL এর সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত ?

OIL এর সদর দপ্তর হল দুলিয়াজান।

২০. ভারতে কতগুলি তৈল শোধনাগার আছে ?

ভারতে মোট 23 টি তৈল শোধনাগার আছে।

২১. ভারতের বৃহত্তম খনিজ তেল শোধনাগার কোনটি ?

ভারতের বৃহত্তম খনিজ তেল শোধনাগার হল জামনগর।

২২. কয়েকটি অচিরাচরিত শক্তির নাম লেখো ?

কয়েকটি অচিরাচরিত শক্তির নাম হল - সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ভূতাপশক্তি ।

২৩. NTPC এর পুরো কথা কী ?

NTPC এর পুরো কথা হল - National Thermal Power Corporation.

২৪. ভারতের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ শক্তিকেন্দ্র হল কোনটি ?

ভারতের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ শক্তিকেন্দ্র হল মুন্দ্রা।

২৫. পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখ ?

পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম হল -মেজিয়া, ফারাক্কা, বক্রেশ্বর, বজবজ, দুর্গাপুর, কোলাঘাট।

২৬. ভারতের প্রথম জলবিদ্যুৎ কোন টি ?

ভারতের প্রথম জলবিদ্যুৎ হল - দার্জিলিং এর সিদ্রাপং।

২৭. বিশ্বের প্রথম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র কবে, কোথায় গড়ে ওঠে ?

বিশ্বের প্রথম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র 1956 সালে যুক্তরাজ্যের ক্যালগর নামক স্থানে গড়ে ওঠে।

২৮. NPCIL -এর পুরো কথা কী ?

NPCIL -এর পুরো কথা হল - নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া।

২৯. ভারতের প্রাচীনতম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র কোনটি ?

ভারতের প্রাচীনতম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র হল - মহারাষ্ট্র রাজ্যের তারপুর।

৩০. ভারতের বৃহত্তম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র কোনটি ?

ভারতের বৃহত্তম পারমানবিক শক্তি কেন্দ্র হল - তামিলনাড়ু রাজ্যের কুদান কুলাম।

৩১. সোলার-ডি-স্যালিনেশন যন্ত্রটি কাজে লাগে ?

সোলার-ডি-স্যালিনেশন যন্ত্রটির সাহায্যে সমুদ্রের জলকে লবন মুক্ত করে পরিশুদ জলে পরিণত করা হয়।

৩২. সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে ?

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের গুজরাত প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

৩৩. ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম কী ?

ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম হল কুর্নুল।

৩৪. বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে ?

বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের তামিলনাড়ু প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

৩৫. ভারতের বৃহত্তম বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ।

ভারতের বৃহত্তম বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম হল - তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারি।

৩৬. ভারতের কয়েকটি বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ।

ভারতের কয়েকটি বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম হল - কন্যাকুমারি, চেন্নাই, ভাসপেট।

৩৭. ভারতের কয়েকটি ভূতাপশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ।

ভারতের কয়েকটি ভূতাপশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র হল - হিমাচল প্রদেশের পাবতী নদী উপত্যাকার মনিকরন, লাদাখের, পুগা উপত্যাকা, ছত্রিশগড়ের তাতাপানি, গুজরাতের কাম্বে ইত্যাদি।

৩৮. ভারতের কয়েকটি পারমানবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ।

ভারতের কয়েকটি পারমানবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র হল - তারাপুর, কালপক্কম, কুদানকুলাম, রাওয়াতভাটা, কৈগা, কাকরাপাড়, নারোয়া।

৩৯. ভারতের কয়েকটি সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম লেখ ?

ভারতের কয়েকটি সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের নাম হল -পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জামুরিয়া, মধ্যপ্রদেশের নিমাচ, রাজস্থানের ফলোধি, পোখরান, যোধপুর প্রভৃতি।

৪০. ভারত কোন কোন দেশ থেকে খনিজ তেল আমদানি করে ?

ভারত যে সমস্ত দেশ থেকে খনিজ তেল আমদানি করে সেগুলি হল - ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত, ভেনেজুয়েলা, নাইজেরিয়া প্রভৃতি।

বড়ো প্রশ্ন :-

১. আকরিক লোহার গুরুত্ব ও ব্যাবহার লেখো।

আকরিক লোহা একটি ধাতব খনিজ পদার্থ। সম্পদ হিসেবে লোহা অপুনর্ভব, সীমিত ও ক্ষয়িষ্ণু প্রকৃতির। লোহা দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য উপাদান।

আকরিক লোহার গুরুত্ব :-আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা যে কটি বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে লোহা অন্যতম। সকল শিল্পের মূলস্তম্ভ হল লোহা। তাই বর্তমান যুগকে “লৌহযুগ” বলা হয়। লোহা পৃথিবীতে সবচেয়ে সহজলভ্য ও ব্যাবহার যোগ্য ধাতু। প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীতে লোহার ব্যাবহার হয়ে আসছে। ভারত সমেত বেশ কয়েকটি দেশের রফতানি বাণিজ্যে লোহা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

আকরিক লোহার ব্যাবহার :- আধুনিক সভ্যতার রূপকার এবং অন্যতম ধারক ও বাহক হল লোহা। উত্তোলিত লোহাকে সরাসরি ব্যাবহার করা যায় না। প্রথমে খনি থেকে তুলে ব্লাস্ট ফার্নোস কোক কয়লা ও চুনাপাথরের সাহায্যে গলিয়ে পিগ আয়রন বা বিশুদ্ধ লোহার পিন্ড প্রস্তুত করা হয়। এর সঙ্গে প্রয়োজন মতো ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল, টাংস্টেন প্রভৃতি সংকর ধাতু মিশিয়ে ইস্পাত প্রস্তুত করা হয়। এই ইস্পাত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন----

i) কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে :- কাস্তে, কোদাল, নিড়ানি,রিপার, থ্রাসার, হারভেস্টার, ট্র্যাক্টর প্রভৃতি কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে ব্যবহার হয়।

ii) পরিবহন সরঞ্জাম নির্মাণে :- জাহাজ, রেল, বাস, লরি ও মোটরগাড়ি নির্মাণে ব্যবহৃত করা হয়।

iii) ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাণে :- বয়লার, খনিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, স্টিম টারবাইন, হিমায়ন, যন্ত্র প্রভৃতি ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

iv) সমরাস্ত্র নির্মাণ :- ট্যাংক , রাইফেল ,পিস্তল ,কামান প্রভৃতি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

v) গৃহস্থালির কাজে :- বাসনপত্র, ছুরি, কাঁচি, আসবাবপত্র, সাঁড়াশি প্রভৃতি সামগ্রী নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

vi) বিভিন্ন শিল্পের কাজে :- কারখানার কাঠামো তৈরিতে, লেদমেশিন নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

২. ভারতের আকরিক লোহার বন্টন আলোচনা করো।

ভারতে যে আকরিক লোহা পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই হেমাটাইট ও ম্যাগনেটাইট গোষ্ঠীর। ভারতের মোট দশটি রাজ্যে আকরিক লোহা উত্তলোন করা হয়ে থাকে। যথা --

i) ওড়িশা :- ওড়িশা আকরিক লোহা উৎপাদনে প্রথম। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - কেত্তনঝড় জেলার কিরিবুরু, ময়ূরভঞ্জ জেলার গরুমহিষণী, বাদামপাহাড় এবং সুন্দরগড় জেলার বোনাই ইত্যাদি।

ii) ছত্তিশগড় :- ছত্তিশগড় আকরিক লোহা উৎপাদনে দ্বিতীয়। প্রধান উত্তোলক অঞ্চল -দান্তেওয়ারা জেলার বায়লাডিলা, কাকের জেলার রাওঘাট, বালোড় জেলার দাল্লি রাজহারা ইত্যাদি।

iii) ঝাড়খন্ড :- ঝাড়খন্ড আকরিক লোহা উৎপাদনে তৃতীয়। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - পশ্চিম সিংভূম জেলার গুয়া, নোয়ামুন্তি, বুদাবুরু ইত্যাদি।

iv) কর্ণাটক :- কর্ণাটক আকরিক লোহা উৎপাদনে চতুর্থ। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - বাজালকোট, বেল্লারি, চিত্রদুর্গ, টুমাকুরু ইত্যাদি।

v) গোয়া :- আকরিক লোহা উৎপাদনে পঞ্চম। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল -উত্তর গোয়া ও দক্ষিণ গোয়া জেলার বিচোলিম, সাতারি, সানগুয়েম, মাপুসা, সিঁড়িগাও ইত্যাদি।

vi) মধ্যপ্রদেশ :- আকরিক লোহা উৎপাদনে ষষ্ঠ। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - বালাঘাট, গোয়ালিয়র, জব্বলপুর, সাসর ইত্যাদি।

vii) মহারাষ্ট্র :- আকরিক লোহা উৎপাদনে সম্মপ্ত। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - চন্দ্রপুর, সিন্ধুদুর্গ, গড়চিরোলি, গন্তিয়া ইত্যাদি।

viii) অন্দ্রপ্রদেশ :- আকরিক লোহা উৎপাদনে অষ্টম। প্রধান উৎপাদক অঞ্চল - অনন্তপুর, কাডাপা, কৃষ্ণা, কুর্নুল ইত্যাদি।

ix) রাজস্থান :- আকরিক লোহা উৎপাদনে নবম স্থান অধিকার করেছে রাজস্থান। এর উৎপাদক অঞ্চলগুলি হল - জয়পুর, সিকার, ভিলওয়ারা ইত্যাদি।

x) তেলেঙ্গানা :- তেলেঙ্গানা আকরিক লোহা উৎপাদনে ভারতের দশম স্থান অধিকার করেছে। এই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত উৎপাদক অঞ্চলগুলি হল - করিমনগর, খাম্মাম, ওয়ারাঙ্গাল ইত্যাদি।

৩. কয়লার গুরুত্ব ও ব্যবহার আলোচনা করো ?

কয়লা একধরণের স্তরীভূত জৈবশীল। উদ্ভিদ দেহাশেষ পাললিক শিলাস্তরে চাপা পড়ে দীর্ঘকাল চাপা থেকে কয়লার সৃষ্টি করে। কয়লা একটি গচ্ছিত শক্তি সম্পদ। কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান খনিজ সম্পদ। সঞ্চিত কয়লার পরিমান অনুসারে ভারত পৃথিবীতে পঞ্চম স্থান অধিকার করে এবং পৃথিবীর মোট কয়লা উৎপাদনের প্রায় 7.7% শতাংশ উৎপাদন করে। কয়লা উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে তৃতীয় স্থানে অধিকার করে।

কয়লার গুরুত্ব :- কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান শক্তিসম্পদ। এদেশে কয়লা পুড়িয়ে তা থেকে উৎপন্ন শক্তির সাহায্যে কলকারখানা, রেলইঞ্জিন, জাহাজ প্রভৃতি চালানো হয়। যদিও এসমস্ত ক্ষেত্রে খনিজ তেল কয়লার স্থান দ্রুতগতিতে দখল করে নিচ্ছে। তবুও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের মতো কয়লা প্রধান দেশে কয়লার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া আমাদের প্রত্যহিক জীবনে কয়লার গুরুত্ব বলে বোঝবার অপেক্ষা রাখে না। কয়লা থেকে পাওয়া যায় অসংখ্য উপজাত দ্রব্য বহুবিধ ব্যবহারের কারনেই এটি হল “ব্ল্যাক ডায়মন্ড”।

কয়লার ব্যবহার :- পৃথিবীতে কয়লার ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। বর্তমান খনিজ তেলের ব্যবহার দ্রুতহারে বৃদ্ধি পেলেও অনেক দেশে এখনো শক্তির প্রধান উৎস হল কয়লা। এর প্রধান ব্যবহার গুলি হল ---

i) তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে :- কয়লা স্বয়ং থেকে বেশি ব্যবহৃত হয় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে। সারা পৃথিবীর মোট বিদ্যুৎশক্তির 40% হয় কয়লা থেকে প্রাপ্ত তাপবিদ্যুৎ। আজও অনুন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের বিদ্যুৎশক্তির প্রধান উৎস হল কয়লা। দক্ষিণ আফ্রিকার মোট বিদ্যুৎশক্তির 93%, অস্ট্রেলিয়ার 92%, পোল্যান্ডের 79%, চিনের 71%, ভারতের 67% হল কয়লা থেকে প্রাপ্ত তাপবিদ্যুৎ।

ii) লৌহ-ইস্পাত শিল্পে :- লৌহ-ইস্পাত শিল্পে আকরিক লোহা গলানোর কাজে ব্লাস্টফার্নেসে কয়লা থেকে প্রাপ্ত কোক কয়লা ব্যবহৃত হয়। ১ টন ইস্পাত প্রস্তুত করতে গড়ে দেড় থেকে দু-টন কোক কয়লা লাগে। পৃথিবীর ইস্পাত উৎপাদনের প্রায় 70% হল কোক কয়লা নির্ভর। পৃথিবীতে প্রতি বছর গড়ে 1.4 বিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপন্ন হচ্ছে। অতএব সহজেই অনুমেয় লৌহ-ইস্পাত শিল্পে কী বিশাল পরিমান কয়লা ব্যবহৃত হয়।

iii) সিমেন্ট, অ্যালুমিনিয়াম, কাগজ ও অন্যান্ন্য শিল্পে :- সিমেন্ট উৎপাদন শিল্পে কয়লা প্রধান জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়। অ্যালুমিনিয়াম, কাগজ প্রভৃতি শিল্পে শক্তির জোগানের অনেকটা আসে কয়লা থেকে। কয়লার উপযাত দ্রব্য হিসাবে যে ছাই, স্ল্যাগ পাওয়া যায় তা সিমেন্ট উৎপাদনের উপাদান হিসাবে কাজে লাগে।

iv) তরল জ্বালানিরূপে কয়লার ব্যবহার :- উচ্চতাপ ও চাপে কয়লাকে গলিয়া তরলে পরিণত করা হয়। পরবতী পর্যায়ে ওই তরল থেকে বিভিন্ন পক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় গ্যাসোলিন ও ডিজেল যা পরিবহনে শক্তির জোগান দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট গ্যাসোলিন ও ডিজেলের 30% কয়লা থেকে প্রস্তুত হয়।

v) ভূ-গর্ভস্থ কয়লা থেকে গ্যাস আহরণ :- ভূগর্ভে অনেক কয়লা আছে যা আহরণ অনেক সময় সম্ভব হয় না। সেই কয়লাকে গ্যাসে রূপান্তর করে তা বিদ্যুৎ, ডিজেল, সার, হাইড্রোজেন উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে এই প্রযুক্তি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।

vi) উপজাত দ্রব্যের ব্যবহার :- কয়লা থেকে পাওয়া যায় নানা উপজাত দ্রব্য যা রাসায়নিক ও রাসায়নিক সার শিল্পে, কৃত্রিম রবার উৎপাদনে, কঠিন ফাইবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

কয়লার উপজাত দ্রব্য -- কোক ওভেনে কার্বোনাইজেশন প্রক্রিয়ায় উচ্চতাপে পাওয়া যায় আলকাতরা ও কোলগ্যাস এবং নিম্নচাপে পাওয়া যায় বিভিন্ন হাইড্রোকার্বন, অ্যামোনিয়া প্রভৃতি দ্রব্য।

৪. ভরতে কয়লার বন্টন আলোচনা করো।

ভরতে উত্তোলিত কয়লার 99% হল গন্ডোয়ানা যুগের। বাকি কয়লা টারশিয়ারি যুগের।

গন্ডোয়ানা যুগের কয়লাখনি :- এই ভূতাত্ত্বিক যুগের কয়লা পাওয়া যায় যেসব অঞ্চলে সেই গুলি হল -

i) ছত্রিশগড় :- এই রাজ্য কয়লা সম্পদে প্রসিদ্ধ। এখানের বেশির ভাগ কয়লা কোকহীন। এই রাজ্যের সুরগুজা জেলার তাতাপানি-রামকোলা, ঝিলিমিলি, বিসরামপুর, লক্ষনপুর ও রামপুর ,বিলাসপুর জেলার কোরবা, দামহামুন্ডা, সেন্দুর, রায়গড় জেলার রায়গড় ও মান্ড নদী উপত্যকা ইত্যাদি অঞ্চলে কয়লা পাওয়া যায়।

ii) ঝাড়খন্ড :- ঝরিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বোকার, গিরিডি ,উত্তর ও দক্ষিণ করনপুরা, রামগড় ইত্যাদি অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়লাখনি রয়েছে।

iii) ওড়িশা :- আঙ্গুল জেলার তালচের, সম্বলপুর, সুন্দরগড় জেলার রামপুর-হিঙ্গির, লাজকুরা প্রভৃতি অঞ্চলে কয়লা পাওয়া যায়।

iv) মধ্যপ্রদেশ :- রেওয়া জেলার উমারিয়া, সোহাগপুর, ছিন্দোয়ারা জেলার পেঞ্চ -কানহান উপত্যকা প্রভৃতি অঞ্চলে কয়লা পাওয়া যায়।

v) তেলেঙ্গানা :- এই রাজ্যের গোদাবরী নদী উপত্যকার অন্তর্গত আদিলাবাদ, করিমনগর, ওয়াঙ্গারাল, খাম্মাম ইত্যাদি জেলায় কয়লা খনিগুলি অবস্থিত।

vi) মহারাষ্ট্র :- ওয়ার্ধা উপত্যকা, কামথি, উমরের মাকরধোকরা, নান্দ বান্দের ও বোখরায় এই রাজ্যের কয়লা খনিগুলো অবস্থিত।

vii) পশ্চিমবঙ্গ :- এই রাজ্যের রানীগঞ্জ, জামুরিয়া, মেজিয়া, অন্তাল, তিনধরিয়া, জয়ন্তি ইত্যাদি অঞ্চলে কয়লা পাওয়া যায়।

টার্সিয়ারি যুগের কয়লা :- যেসব অঞ্চলে টার্সিয়ারি কয়লা পাওয়া যায় যেগুলি হল -

i) অসম:- এই রাজ্যের মাকুম, ডিলি-জয়পুর ও মিকির পাহাড়ে কয়লা পাওয়া যায়।

ii) অরুণাচল প্রদেশ :- নামচিক- নামফুক ও মিয়াও বুনো এই রাজ্যের প্রধান কয়লা খনি অঞ্চল।

iii) মেঘালয় :- এই রাজ্যের খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড়ে কয়লা উত্তোলন করা হয়।

iv) নাগাল্যান্ড :- বোরজান ও তিয়েনসাং কয়লা উত্তোলনের জন্য খ্যত।

৫. খনিজ তেলের গুরুত্ব ও ব্যবহার লেখ।

খনিজ তেলের ইংরেজি প্রতিশব্দ Petroleum এর উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ Petro অর্থাৎ শিলা এবং Oleum অর্থাৎ তেল থেকে ,অর্থাৎ শিলা স্তরে যে তেল সঞ্চিত থাকে তাকে খনিজ তেল বলে।

খনিজ তেলের গুরুত্ব :- আধুনিক যন্ত্র সভ্যতা অনেকটাই খনিজ টেলি নির্ভর। যানবাহনের রসদ, রাস্তা তৈরি, কৃষিতে সার প্রয়োগ প্রভৃতির জোগান আসে খনিজ তেল থেকে। পেট্রো-রসায়ন শিল্প খনিজ তেল নির্ভর। বহুবিধ ব্যবহারের কারণে এটিকে “ তরল সোনা ” বলা হয়ে থাকে। খনিজ তেল মূলত হাইড্রোকার্বন ও অন্যন্য জৈব যৌগের মিশ্রণ। এদের মধ্যে কার্বন ও হিগড্রজেন বিশেষ গুরুত্ব পূর্ণ। অপরিশেষিত তেলকে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য এর বিভিন্ন অংশকে আংশিক পাতন পদ্ধতি পৃথক করা হয়। পেট্রোলিয়মে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদনের স্ফুটনাঙ্ক ভিন্ন ভিন্ন হয়। আংশিক পাতন পক্রিয়ায় অন্তর্গত বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

খনিজ তেলের ব্যবহার :- খনিজ তেল আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর বিভিন্ন ব্যবহার গুলো হল --

i) পরিবহনের কাজে :- খনিজ তেলজাত পেট্রোল ও ডিজেলের সাহায্যে মোটরগাড়ি, বাস, ট্রাক, মোটর সাইকেল, রেলইন্জিন জাহাজ ও স্টিমার চালানো হয়।

ii) তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে :- খনিজ তেল থেকে প্রাপ্ত ডিজেল তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগে।

iii) আলো জ্বালাতে, তাপ উৎপাদনে :- বিদ্যুৎ যেইখানে পৌঁছায়নি সেখানে আলো জ্বালাতে এবং শীতের দেশে ঘর গরম রাখতে কেরোসিনের সাহায্যে আগুন জ্বালানো হয়।

iv) যন্ত্রপাতি সচল রাখতে :- যন্ত্রপাতি সচল রাখতে এবং যন্ত্রপাতির ঘর্ষণজনিত ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে খনিজ তেলজাত লুব্রিকেটিং তেল ব্যবহার হয়।

v) সামরিক প্রয়োজনে :- যুদ্ধ-জাহাজ, ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান ইত্যাদি চালাতে খনিজ তেলজত সামগ্রী লাগে।

vi) রাস্তা তৈরিতে :- খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য পিচ দিয়ে পাকা রাস্তা তৈরি হয়।

vii) শিল্পের কাঁচামালরূপে :- খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য ন্যাপথা পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। এছাড়া কৃত্রিম তন্তু, সার, কীটনাশক, ডিটারজেন্ট, প্লাস্টিক, কৃত্রিম রাবার প্রভৃতি অসংখ্য ধরনের শিল্পের কাঁচামাল খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্যগুলি জোগান দেয়।

viii) অন্যান্য কাজে :- খনিজ তেল শোধন করার সময় প্রাপ্ত মোম দিয়ে মোমবাতি প্রস্তুত করতে এবং ভ্যাসলিন ত্বক রক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়।

৬. ভারতে খনিজ তেলের বন্টন আলোচনা করো।

ভারতে খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চল গুলি হল -

1) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা :- এখানকার খনিজ তেলের ভান্ডার প্রায় 1,300 কিমি জুড়ে উত্তর-পূর্ব অসমের ডিহং উপত্যকা থেকে পূর্বে সুর্মা উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তত। Indian Bureau of Mines এর তথ্যানুসারে 2013-14 সালে এই অঞ্চলে 47.10 লক্ষ টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল এখানকার খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলগুলি হল - নাহারকাটিয়া ,মোরান, হুগরিজন, পাথারিয়া, রচুসাগর, শিবসাগর, গেলেকি, লাকুয়া, বদরপুর ইত্যাদি।

2) গুজরাত উপকূল অঞ্চল :- Indian Bureau of Mines -এর তথ্যানুসারে 2013-14 সালে এই অঞ্চলে 50.61 লক্ষ টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল। এখানকার প্রধান খনিজ তেল উত্তোলক কেন্দ্রগুলি হল -i) আংকলেশ্বর জেলার আংকলেশ্বর। ii) সুরাত জেলার কোসাম্বা। iii) গান্ধীনগর জেলার কালোল। iv) মহেসানা জেলার মহেসানা,বালোল, সানথাল, আমেদাবাদ জেলার সনন্দ, ঢোলকা ইত্যাদি।

3) রাজস্থান :- 2013-14 সালে এই রাজ্যে প্রায় 91.80 লক্ষ টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল। রাজস্থান রাজ্যের বারমের জেলার মঙ্গলা, ভাগ্যম ও ঐশ্বর্য হল প্রধান খনিজ তেল উত্তোলন কেন্দ্র।

4) অরুণাচল প্রদেশ :- উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটিতে 1.11 লক্ষ টন খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়। এই রাজ্যের খারসাং ও খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়।

5) পশ্চিম উপকূলের সমুদ্রগর্ভের তেলের খনি :- i) আরব সাগরের মাইসোপানে অবস্থিত,প্রায় 2000 বর্গকিমি ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট বম্বে হাই তেলক্ষেত্র ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো। 2013-14 সালে এই অঞ্চলে 1.56 কোটি টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল। ভারতে খনিজ তেল উত্তোলনে বম্বে হাই প্রথম স্থান অধিকার করে। ii) পান্না-মুক্তা তেলক্ষেত্র : মুম্বাই -এর 95-100 কিমি উত্তর-পশ্চিমে আরব সাগরের দরিয়া অঞ্চলে অবস্থিত পান্না-মুক্তা তেলক্ষেত্র থেকে দৈনিক 19000 ব্যারেল খনিজ তেল তোলা হয়।

6) পুর্ব উপকূলের সমুদ্রগর্ভের তেলের খনি অঞ্চল :- Indian Bureau of Mines-এর তথ্যানুসারে 2011-12 সালে এই অঞ্চলে 522 হাজার টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়েছিল। পূর্ব উপকূলের কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকার অগভীর সমুদ্রে অবস্থিত রাভা একটি খনিজ তেল উত্তোলক কেন্দ্র।

7) তামিলনাড়ু :- এই রাজের কাবেরী অববাহিকার নরিমানম ও কবিলাপ্পাল -এ খনিজ তেল উত্তোলক করা হয়।

৭. প্রচলিত শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।

যে সকল উৎস থেকে প্রচুর পরিমানে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা হয় অথবা যে সকল সম্পদ সুদীর্ঘকাল ধরে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে ,তাদের প্রচলিত শক্তিসম্পদ বলে।

সুবিধা :- প্রচলিত শক্তির কিছু সুবিধা আছে , যেমন --

i) সহজতর উৎপাদন প্রক্রিয়া অর্থাৎ খুব উন্নত প্রযুক্তি ছাড়াই সরলতর প্রক্রিয়ায় প্রচলিত শক্তি উৎপাদন সম্ভব।

ii) প্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎপাদন ব্যয় কম।

iii) যেহেতু প্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎস গুলি অধিকাংশই গচ্ছিত এবং বস্তুগত সম্পদ, তাই একসাথে বিপুল পরিমানে শক্তি উৎপাদন সম্ভব।

iv) প্রচলিত শক্তি সম্পদের কোন অঞ্চলে কম জোগান থাকলে তা অন্য অঞ্চল থেকে আমদানি করা যায়।

অসুবিধা :- প্রচলিত শক্তি সম্পদের কিছু অসুবিধা আছে। যেমন --

i) প্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎস গুলির সঞ্চয় ভান্ডার ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে।

ii) শক্তি উৎপাদনের সময় এগুলি দূষণ ছড়ায়।

iii) প্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎস গুলি যেহেতু মূলত বস্তুগত সম্পদ, তাই সেগুলি স্থান সাপেক্ষ। অর্থাৎ পৃথিবীর কিছু নিদিষ্ট স্থানে এই সম্পদগুলি পাওয়া যায়।

iv) প্রচলিত শক্তি সম্পদের আহরণ ব্যয় অত্যাধিক।

৮. অপ্রচলিত শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।

শক্তি উৎপাদনে যে সকল স্বল্প পরিমানে ব্যবহৃত হয় অথবা যে সম্পদ গুলির ব্যবহার শক্তি উৎপাদনে সাম্প্রতিককালে শুরু হয়েছে, তাদের অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ বলা হয়।

সুবিধা :- অপ্রচলিত শক্তির বেশ কিছু সুবিধা আছে। যেমন --

i) অপ্রচলিত শক্তির উৎস গুলি সহজলভ্য। অর্থাৎ অপ্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎস গুলি স্থান সাপেক্ষ না হওয়ায় সহজে ও অতি স্বল্পমূল্যে এগুলির জোগান সম্ভব হয়।

ii) অপ্রচলিত শক্তির উৎস গুলি প্রবাহমান সম্পদ।

iii) এই শক্তি ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণের কোনো আশঙ্কা না সম্ভাবনা থাকে না।

iv) অপ্রচলিত শক্তি পৃথিবীর সব দেশেই পাওয়া যায়।

অসুবিধা :- অপ্রচলিত শক্তি সম্পদের কিছু অসুবিধা আছে। যেমন --

i) অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ থেকে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে উন্নত কারিগরি বিদ্যা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন।

ii) অপ্রচলিত শক্তি সম্পদের উৎপাদন ব্যয় বেশি হয়।

iii) অপ্রচলিত শক্তির উৎস গুলিকে সব ঋতুতে, সব স্থানে সমান ভাবে পাওয়া যায় না। তাই ঘাটতি সময়ে বা সবস্থানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয় না।

iv) অপ্রচলিত শক্তি সম্পদ গুলি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমান খুব সামান্য হয়।

৯. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি -এর মধ্যে পার্থক্য লেখ।

প্রচলিত শক্তি	অপ্রচলিত শক্তি
এটি সুদীর্ঘ কাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যথা - কয়লা 350 বছর, খনিজ তেল 100 বছরের প্রাচীন।	এটি অতি সাম্প্রতিককালে ব্যবহার শুরু হয়েছে। বিশেষত বিংশ শতকের শেষ লগ্ন থেকে।
কয়লা, তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, নদনদী থেকে এটি উৎপন্ন হয়।	এর উৎস প্রথমটির অপেক্ষা অনেক বেশি। যথা - সূর্যরশ্মি, বায়ু প্রবাহ, জোয়ারভাটা, সমুদ্র তরঙ্গ, ভূতাপ।
এর উৎস সমূহ নিদিষ্ট স্থানে সঞ্চিত ও গচ্ছিত সম্পদ এবং পরিমান সীমিত।	এর উৎস সমূহ অবাধ ও প্রবাহমান জোগান অফুরন্ত।
এরা পরিবেশের শত্রু, নির্গত ছাই, ধোঁয়া,CO2,তেজস্ক্রিয় বর্জ্য, জল,বায়ু ও মাটি দূষণ ঘটায়। বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হয়।	এরা পরিবেশের বান্ধব শক্তি। কোনোভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটে না। এরা বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে খুবই আদর্শ।
এরা ক্ষয়িষ্ণু সম্পদ। ক্রমাগত ও বহুল ব্যবহারে অদূর ভবিষ্যতে নিঃশোষিত হয়। তাই আয়ুষ্কাল ক্রমশ হ্রাস পায়। নির্ভরযোগ্যতা অনেক কম।	এটি অক্ষয়িষ্ণু সম্পদ। অনিদৃষ্টকালে ধীরে ক্রমশ বহুল ব্যবহারে সুদূর ভবিষ্যতে নিঃশোষিত হয় না। নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেশি।
এগুলি অপুনর্ভব সম্পদ। সঞ্চয় ক্রমশ হ্রাস পেলেও পুনরায় সৃষ্ট হয়ে প্রকৃতিতে সমপরিমানে ফিরে আসে না অর্থাৎ পুররুদ্ধার অযোগ্য।	এগুলি পুনর্ভব সম্পদ। জৈবভর, জৈবগ্যাস সাময়িকভাবে হ্রাস পেলেও প্রাকৃতিক নিয়মে সমপরিমানে পূরণ হয় অর্থাৎ পুনরুদ্ধার যোগ্য।
এই শক্তি ভুপৃষ্টে অসমভাবে বন্টিত ও স্থানীকৃত। মুষ্টিময় কিছু দেশের নিদিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সর্বত্র উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা যায় না।	এটি সমগ্র বিশ্বে সর্বত্র এবং ব্যপ্ত এই সম্পদ সমভাবে বন্টিত ও সহজলভ্য। সর্বত্র উৎপাদন কেন্দ্র সহজে স্থাপন করা যায়।

১০. পূর্ব ভারতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অধিক পরিমানে গড়ে উঠছে কেন ?

পূর্ব ভারতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অধিক পরিমানে গড়ে ওঠার কারণ :-

i) প্রচুর কয়লা পাওয়া যায় :- ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিশগড় প্রভৃতি রাজ্যে প্রচুর কয়লা সঞ্চয় রয়েছে। তাপবিদ্যুৎ গড়ে ওঠার এটাই মূল কারণ।

ii) বিদ্যুৎ গ্রিড :- এখন সারা ভারত বিদ্যুৎ গ্রিডের মাধ্যমে যুক্ত। তাই এই অঞ্চলে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বিক্রির জন্য যেকোনো প্রান্তে সহজে পাঠানো হয়।

iii) শিল্পাঞ্চল গুলি বিদ্যুতের চাহিদা :- পূর্ব ভারতের এই রাজ্যগুলিতে বৃহদায়তন কয়েকটি শিল্পাঞ্চল রয়েছে। জনবসতি এখানে বেশি।

iv) রেল ও সড়ক যোগাযোগ :- রেল ও সড়ক পথের মাধ্যমে কয়লা খনি থেকে সহজেই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা আনা হয়।

v) অন্যান্য বিদ্যুতের অভাব :- এই অঞ্চলে জলবিদ্যুতের উৎপাদন খুব কম। একটিও পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। বিদ্যুতের অধিকাংশ চাহিদা মেটানো হয় তাপবিদ্যুতের মাধ্যমে।

১১. জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।

জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা :-

i) প্রবহমান জল অফুরন্ত বলে এটি ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা নেই।

ii) জল কিনতে হয় না বলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক কম।

iii) জল বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা নেই।

iv) অন্যান্য বিদ্যুতের তুলনায় জলবিদ্যুতের উৎকর্ষতা বেশি।

v) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের রক্ষনাবেক্ষনের খরচ অনেক কম।

vi) বাঁধ নির্মানের জন্য অন্যান্য সুবিধা বাড়ে।

জলবিদ্যুৎ শক্তির অসুবিধা :-

i) প্রাথমিক খরচ খুব বেশি।

ii) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দীর্ঘ সময় লাগে।

iii) যেকোনো স্থানে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যায় না।

iv) চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্প্রসারণ সম্ভব নয়।

১২. পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা:-

i) এই বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাঁচামাল লাগে অল্প। এক কেজি ইউরেনিয়াম থেকে 25-30 লক্ষ টন কয়লার সমান বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

ii) সরাসরি পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা কম।

iii) অন্যান্য বিদ্যুৎ অপেক্ষা এই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কম।

iv) একটি কেন্দ্রেই প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

পারমানবিক বিদ্যুৎ শক্তির অসুবিধা :-

i) বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে ফল হয় মারাত্বক। চেরনোবিল ও ফুকুশিমা - দাইচি দুর্ঘটনায় ক্ষতি হয় প্রচুর।

ii) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য পদার্থ সংরক্ষণ একটি গুরুতর সমস্যা।

iii) কিছু কেন্দ্রে প্লুটোনিয়াম উৎপাদন হয়, যার থেকে পারমানবিক বোমা তৈরি করা যায়।

iv) শ্রমিকদের সর্বদা বিপদের মধ্যে কাজ করতে হয়।

Bharater Sampad Class 9 Geography | ভারতের সম্পদ

Ratings