• SCHOOL BOARDS
  • WBBSE/WBCHSE
  • CLASS 9
  • HISTORY
  • দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর Chapter 2 Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad

দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর Chapter 2 Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad

Language : Bengali

The Note contains Textual Question Answers from WBBSE Class 9 History Chapter 2 Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad ( দ্বিতীয় অধ্যায়  বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ ). Read the Question Answers carefully. This Question Answer set from the WBBSE board provides quality Multiple Choice Questions (MCQ), Short Answer Type Questions (SAQ), and Long Answer Type Questions from the above chapter. By reading these, students will get a clear idea about that chapter. It will enhance their knowledge and enable them to get good marks in the board exams. 

Class 9 History Chapter 2 Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad (বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ)

Short Answer Type Question (SAQ) from Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad

Long Answer Type Question from Biplobi Adorsho, Napoleonian Samrajjo o Jatiotabad,

নবম শ্রেণি ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ ,

নবম শ্রেণি বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ সম্পূর্ণ আলোচনা ও অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর,

নবম শ্রেণি ইতিহাস বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ থেকে সংক্ষিপ্ত, রচনাধর্মী ও ব্যাখ্যা ধর্মী প্রশ্নোত্তর 


LRNR provides this material totally free

দ্বিতীয় অধ্যায় 

বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ 

প্রশ্নমান -1

1. নেপোলিয়ান কোন শক্তির অবরোধ দেখে তুলো বন্দর পুনঃউদ্ধার করে ?

ইংল্যান্ড। 

2. নেপোলিয়ান প্রথমে কতবছরের জন্য কনসাল হিসেবে নিযুক্ত হন ?

১০ বছর। 

3. কনসুলেটের সংবিধানের রচয়িতা ছিলেন ?

- আবেসিইয়েন্স। 

4. নেপোলিয়ান সমগ্র ফ্রান্সকে কতগুলি প্রদেশে ভাগ করেন ?

83 টি প্রদেশে। 

5. ফরাসি বিপ্লবের অগ্নিময় তরবারি বলা হয় ?

নেপোলিয়ানকে। 

6. ওয়াটারলু যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাপতি ছিলেন ?

ডিউক অব ওয়েলিংটন। 

7. ইউরোপের মুক্তিদাতা বলা হয় ?

নেপোলিয়ানকে। 

8. কোড নেপোলিয়ানে ধারার সংখ্যা ছিল ?

২২৮৭ টি। 

9. নেপোলিয়ান কাকে স্পেনের সিংহাসনে বসান ?

জোসেফ বোনাপার্ট। 

10. নেপোলিয়ানকে নির্বাসন করা হয়েছিল। 

এলবা দ্বীপে

11. কনসুলেটের শাসনকালে তিনজন কনসালের নাম লেখ। 

নেপোলিয়ান, আবেসিইয়েস, রজার ডুকোস 

12. পিরামিডের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয় ?

১৭৯৮ খ্রি: ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মধ্যে। 

13. কে কবে ‘ব্যাংক অব ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন ?

নেপোলিয়ান ১৮০০ খ্রি : 

14. “লিজিয়ন অব অনার’ পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা চালু করেন ?

 নেপোলিয়ান। 

15. ‘আমিই বিপ্লব’, ‘আবার আমিই বিপ্লব ধ্বংস করেছি’ - নেপোলিয়ান বলেছেন। 

16. কাকে কেন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলা হয় ?

সম্রাট নেপোলিয়ান কোড নেপোলিয়ান আইন সংহিতার প্রণয়নের জন্য দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ন বলা হয়। 

17. ট্রাফালগারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয় ?

১৮০৫ খ্রি : ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। 

18. তিলসিটের সন্ধি কবে কাদের মধ্যে হয় ?

১৮০৭ খ্রি: নেপোলিয়ান ও প্রথম আলেকজান্ডারের মধ্যে। 

19. “War and peace” - গ্রন্থটি লিও তলস্তয় -র লেখা। 

20. নেপোলিয়ান সেন্ট হেলেনা দ্বীপে মারা যায়। 

21. নেপোলিয়ান কোন দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন ?

উঃ - কর্সিকা দ্বীপে 

22. নেপোলিয়ান কত বছর বয়সে দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হন ?

উঃ -16 বছর বয়সে। 

23. তৃতীয় রাষ্ট্রজোট কোন কোন শক্তি নিয়ে গঠিত ছিল ?

উঃ - ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া ও সুইডেন নিয়ে। 

24. নেপোলিয়ান ইটালির সিংহাসনে কাকে নিযুক্ত করেন ?

উঃ - নেপোলিয়ানের সৎ পুত্র ইউজিনকে। 

25. নেপোলিয়ান জার্মানির সিংহাসনে কাকে বসান ?

উঃ - তাঁর ভাই জেরোমকে। 

26. নেদারল্যান্ডের সিংহাসনে নেপোলিয়ান কাকে বসান ?

উঃ - তাঁর ভাই লুসিয়ানকে 

27. নেপোলিয়ান নেপলস -এর সিংহাসনে কাকে নিযুক্ত করেন ?

উঃ - তাঁর ভগ্নিপতি মিউরাহকে। 

28. কত খ্রিস্টাব্দে রোমান সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে ?

উঃ - 1806 খ্রিস্টাব্দে। 

29. রাইন রাষ্ট্রসংঘ কটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত ?

উঃ -16 টি 

30. রাইন রাষ্ট্রসংঘের অন্তর্গত দুটি রাষ্ট্রের নাম লেখ। 

উঃ - ব্যাডেন, ব্যাভারিয়া প্রভৃতি। 

31. সিস- আলপাইন প্রজাতন্ত্র বা ইটালি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা কে ?

উঃ - নেপোলিয়ান বোনাপার্ট। 

32. জোসেফ বোনাপার্টের আগে স্পেনের রাজা কে ছিলেন ?

উঃ - রাজা ফার্দিনান্দ। 

33. নেপোলিয়ান পোল্যান্ডকে কিসে পরিণত করেন ?

উঃ - গ্রান্ড ডাচি অব ওয়ারশ’এ 

34. নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে স্পেনের জনগনরা যে যুদ্ধ করে তাতে তারা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করেন ?

উঃ - গেরিলা পদ্ধতি 

35. কিংডম অব অয়েস্টফেলিয়া কে গঠন করেন ?

উঃ - নেপোলিয়ান 

36. কিংডম অব অয়েস্টফেলিয়ার অন্তর্ভুক্ত দুটি রাজ্যের নাম লেখ ?

উঃ - ব্রান্সউইক, হেসে -কেসেল প্রভৃতি। 

37. গ্রান্ড ডাচি অব ওয়ারশ’এর শাসনভার কাকে দেওয়া হয় ?

উঃ - স্যাক্সনির রাজাকে 

38. কোন সন্ধির দ্বারা নেপোলিয়ান অস্ট্রিয়ার অধীনস্ত ইটালির রাজ্যগুলি দখল করেন ?

উঃ - ক্যাম্পো ফোর্মিও ও প্রেসবার্গের সন্ধির দ্বারা। 

39. ট্রাফালগারের যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ নৌসেনাপতি কে ছিলেন ?

উঃ - হোরেশিও নেলসন 

400. নেপোলিয়ান কোন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ?

উঃ - একটি অসচ্ছল অভিজাত পরিবারে। 

41. চতুর্থ শক্তিজোট কোন কোন শক্তি নিয়ে গঠিত হয়েছিল ?

উঃ - রাশিয়া, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ডকে নিয়ে। 

42. হল্যান্ডের রাজা কে ছিলেন ?

উঃ - উইলিয়াম অব অরেঞ্জ। 

43. এলবা দ্বীপটি কোথায় অবস্থিত ?

উঃ - ফ্রান্স ও ইটালির মাঝে ভূমধ্যসাগরে। 

44. শোমো -এর সন্ধি কাদের মধ্যে স্বাক্ষর হয় ?

উঃ - ইংল্যান্ড, রাশিয়া, প্রাশিয়া ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যে। 

45. ফনটেন ব্লু সন্ধি কাদের মধ্যে স্বাক্ষর হয় ?

উঃ - নেপোলিয়ান ও মিত্রশক্তি জোটের মধ্যে। 

46. টুরুজেনের সন্ধি কাদের মধ্যে হয় ?

উঃ - রুশ জার প্রথম আলেকজান্ডার ও প্রাশিয়ার সেনাপতি ইয়র্ক -এর মধ্যে। 

47. আর্থার ওয়েলেসলির অপর নাম কী ?

উঃ - ডিউক অব ওয়েলিংটন 

48. কতদিন শাসনের পর জোসেফ বোনাপার্ট রাজধানী মাদ্রিদ ছাড়তে বাধ্য হন ?

উঃ - মাত্র 11 দিন। 

49. বেলেনের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল ?

উঃ - ফ্রান্স ও স্পেনের মধ্যে 

50. স্যালামাঙ্কার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল ?

উঃ - ফ্রান্সের সাথে স্পেন ও ব্রিটেনের মিলিত শক্তির। 

51. হপস ও লকের লেখা গ্রন্থের নাম লেখ। 

উঃ - হপস - লেভিয়াথান এবং লক - Two Treatises on civil Government.

52. “সামাজিক চুক্তি”- মতবাদের প্রবক্তা ?

উঃ - রুশো

SAQ & Broad Notes

1. কনসুলেটের শাসন কী ?

ফরাসি সেনাপতি নেপোলিয়ান ১৭৯৯ খ্রি: ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সে এক নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থা নেপোলিয়ান সহ মোট তিনজন কনসালের হাতে ফ্রান্সের শাসনভার তুলে দেওয়া হয়। এটি কনসুলেটের শাসন নামে পরিচিত। 

2. “ধর্ম মীমাংসা চুক্তি” কী ?

ফরাসি বিপ্লব কালে ‘সিভিল কনস্টিটিউশন অব দ্য ক্লাজি” নামে এক দলিলদ্বারা ফরাসি গির্জার জাতীয়করণ করা হলে ফরাসি রাষ্ট্রের সঙ্গে পোপের বিরোধ বাধে। এই বিরোধের মীমাংসার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ান পোপ সপ্তম পায়াস - এর সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন, তা ধর্ম মীমাংসা চুক্তি নামে পরিচিত। 

3. কোড নেপোলিয়ান কী ?

ফ্রান্সের শাসক নেপোলিয়ান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচলিত আইন গুলির পার্থক্য দূর করে এবং পরস্পর বিরোধী আইনগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে ১৮০৪ খ্রি : দেশে এক নতুন আইন ব্যবস্থা চালু করেন। এটি “কোড নেপোলিয়ান” নামে পরিচিত। 

4. “লিজিয়ন অব অনার” কী ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান রাজকর্মচারীদের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দক্ষ কর্মচারীদের একটি বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের উদ্যোগ নেন। এই সম্মান “লিজিয়ন অব অনার” নামে খ্যাত। 

5. “কনফেডারেশন অব দ্য রাইন” কী ? এর প্রতিষ্ঠাতা কে ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান জার্মানির উটেমবার্গ, বেডেন, হেসবার্গ প্রভৃতি ছোটো ছোটো রাজ্য দখল করে কনফেডারেশন বা রাষ্ট্র সমবায় গঠন করে। এটি কনফেডারেশন অব দ্য রাইন নামে পরিচিত। 

এর প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট নেপোলিয়ান। 

6. মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কী ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বার্লিন ডিক্রি, মিলান ডিক্রি, ওয়ার্স ডিক্রি এর মাধ্যমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ ঘোষণা করে বলেন যে, ইংল্যান্ডের কোনো জাহাজ ইউরোপের কোনো বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং ইউরোপের কোনো রাষ্ট্র ইংল্যান্ড থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবে না। এই নীতি মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা নামে পরিচিত। 

7. “অডারস ইন কাউন্সিল” কী ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বার্লিন ডিক্রির দ্বারা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ ঘোষণা করলে ইংল্যান্ডও ১৮০৭ খ্রি: ফ্রান্স ও তার মিত্র দেশগুলির বিরুদ্ধে পাল্টা অবরোধ ঘোষণা করেন যা “অডারস ইন কাউন্সিল” নামে পরিচিত। 

8. কোন যুদ্ধকে জাতি সমূহের যুদ্ধ বলা হয় এবং কেন ?

চতুর্থ শক্তি জোটের বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র ১৮১৩ খ্রি: জার্মানির লাইপজিগের যুদ্ধে নেপোলিয়ানকে পরাজিত করে যা জাতিসমূহের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ইউরোপের প্রায় ১৩ টি রাষ্ট্র লাইফজিগের যুদ্ধে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অংশ নেয় এই জন্য এই যুদ্ধকে জাতি সমূহের যুদ্ধ বলা হয়। 

9. পোড়া মাটি নীতি কী ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান ১৮১২ খ্রি: রাশিয়া আক্রমন করলে রাশিয়া সম্মুখ যুদ্ধ এড়িয়ে সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে ক্রমাগত পিছু হটতে থাকে। ফরাসি বাহিনী রাশিয়ায় যাতে সমস্যায় পড়ে সেই উদ্দেশ্যে পিছু হটার সময় রুশ বাহিনী নিজেদের রাস্তাঘাট ও সেতু ধ্বংস করে, খাদ্যশস্য, শস্যক্ষেত্র আগুনে পুড়িয়ে, পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দিয়ে যায়।  রুশ বাহিনীর এই পদক্ষেপ পোড়ামাটির নীতি নামে খ্যাত। 

10. শত দিবসের রাজত্ব সম্পর্কে কী জান ?

১৮১৫ খ্রি: শুরুতে ফ্রান্সে গোলযোগের পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ান এলবা দ্বীপের নির্বাসন থেকে পালিয়ে ফ্রান্সে ফিরে আসেন। সাধারণ মানুষ তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানালে রাজা অষ্টাদশ লুই সিংহাসন ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর তিনি ২০ মার্চ থেকে ২৯ শে জুন ( ১৮১৫ খ্রি:) পর্যন্ত মোট ১০০ দিন রাজত্ব করেন। যা শত দিবসের রাজত্ব নামে পরিচিত। 

11. ওয়াটারলু যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয় ?

১৮১৫ খ্রি: নেপোলিয়ান এর ইংল্যান্ড এবং প্রাশিয়ার যৌথ বাহিনীর মধ্যে। 

12. নেপোলিয়ানকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় কেন ?

নেপোলিয়ান বোনাপার্ট কে বিপ্লবের সন্তান বলা হয় কারণ :

i) ফরাসি বিপ্লবের উদারনীতি নেপোলিয়ানকে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছিল। 

ii) ফরাসি বিপ্লব প্রসূত সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শ নেপোলিয়ান তার শাসনকালে কার্যকর করেছিলেন। 

iii) ফরাসি বিপ্লবের মূল আদর্শগুলি তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেন। 

13. নেপোলিয়ানকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয় কেন 

i) বিপ্লবের স্বাধীনতার আদর্শ তিনি ধ্বংস করেন। 

ii) বিপ্লব ফ্রান্সে যে রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল তিনি সেই রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। 

14. নেপোলিয়ানের উত্থান ও ক্ষমতালাভ সম্পর্কে আলোচনা করো। 

আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রনায়ক। যিনি এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও নিজ প্রতিভার গুণে ফ্রান্সের শাসনভার দখল করেন। 

উত্থান - নেপোলিয়ান মাত্র 16 বছর বয়সে ফরাসি গোলন্দাজ বাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে নিযুক্ত হন। এই সময় তিনি ইংল্যান্ডের কাছ থেকে ফ্রান্সের তুলো বন্দর পুনরুদ্ধার করে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হন। তিনি উন্মত্ত জনতার হাত থেকে ফ্রান্সকে রক্ষা করার জন্য মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। 

সামরিক সাফল্য - ডাইরেক্টরির শাসনকালে নেপোলিয়ান ইতালির সার্ভিনিয়া, নেপলস, পার্মা ও মডেনাকে পরাজিত করে। অষ্ট্রিয়াকে পরাজিত করে মিলান দখল করে। পোপের রাজ্যে আক্রমন করে পোপকে টলেন্টিনার সন্ধি সাক্ষরে বাধ্য করেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পিরামিডের যুদ্ধে জয়লাভ করলেও, নীলনদের যুদ্ধে পরাজিত হন। 

ক্ষমতা দখল - ডাইরেক্টরির শাসনকালে শাসন ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলার সুযোগে নেপোলিয়ান সেনাবাহিনীর সহায়তায় ডাইরেক্টরির শাসকদের পদচ্যুত করে তিনি ফ্রান্সে কনস্যুলেটের শাসন প্রতিষ্ঠা করে। তিনি প্রথমে 10 বছরের জন্য এবং পরে সংবিধান সংশোধন করে 1802 খ্রিষ্টাব্দে আজীবন কনসাল পদ লাভ করেন। 1804 খ্রিস্টাব্দে সম্রাট উপাধি গ্রহণের মাধ্যমে নেপোলিয়ান ফ্রান্সে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। 

15. নেপোলিয়ানের সংস্কার গুলি লেখ ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান শুধু সমরকুশলী যোদ্ধা হিসাবেই নয়।  সুদক্ষ সংস্কারক হিসেবেও কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।  ঐতিহাসিক ফিশার বলেছেন যে নেপোলিয়ানের সাম্রাজ্য ক্ষণস্থায়ী হলেও ফ্রান্সে তাঁর অসামরিক সংস্কারগুলি গ্রানাইট পাথরের শক্ত ভিতের উপর নির্মিত হয়েছিল। 

সংস্কার - 

i) শাসনতান্ত্রিক সংস্কার - নেপোলিয়ান ফ্রান্সে আইনের শাসন প্রবর্তন করেন এবং জনগণের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা দেন। তিনি সমগ্র দেশকে 83 টি ‘Department’ -এ ভাগ করেন। সেখানে ‘প্রিফেট’ নামে শাসক নিয়োগ করেন। তিনি প্রদেশ গুলিকে বিভিন্ন জেলায় বিভক্ত করে সেখানে ‘সাব-প্রিফেট’ নিয়োগ করেন। 

ii) অর্থনৈতিক সংস্কার - দেশের অর্থনৈতিক সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। 

a) তিনি সরকারি ব্যয় হ্রাস ও অডিট প্রথা চালু করেন। 

b) সবাইকে আয়কর দিতে বাধ্য করেন। 

c) নতুন কর না চাপিয়ে পুরানো কর আদায়ে জোর দেন। 

d) ‘ব্যাঙ্ক অব ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন। 

iii) শিক্ষা সংস্কার - নেপোলিয়ান ফ্রান্সে বেশ কিছু শিক্ষা সংস্কার করেন সেগুলি হল - 

a) ফ্রান্সে বেশ কিছু মাধ্যমিক, চিকিৎসা, কারিগরী, আইন, শিক্ষক-শিক্ষন বিদ্যালয় স্থাপন করেন। 

b) 29 টি লাইসি প্রতিষ্ঠা করেন। 

c) ‘University of France’ প্রতিষ্ঠা করেন। 

iv) ধর্মীয় সংস্কার - নেপোলিয়ন পোপ সপ্তম পায়াসের সঙ্গে যে চুক্তি করেন তা ধর্ম মীমাংসা চুক্তি নামে পরিচিত। এতে বলা হয় -

a) পোপ ফরাসী গির্জা ও সম্পত্তির জাতীয়করণ মেনে নেন। 

b) স্থির হয় যে সরকার যাজকদের নিয়োগ করবে এবং পোপ তাদের স্বীকৃতি দেবে।

v) আইন বিষয়ক সংস্কার - ‘কোড নেপোলিয়ান’ এতে বলা হয় -

a) সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি লিখতে হবে। 

b) ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সম্পত্তির অধিকারের স্বীকৃতি। 

c) আইনের দৃষ্টিতে সাম্য। 

d) সরকারি চাকরিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ইত্যাদি। 

vi) মূল্যায়ন - নেপোলিয়ান তার সংস্কারের দ্বারা ফ্রান্সের শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনেন।  ডেভিড টমসন বলেছেন নেপোলিয়নের শাসন শুধু প্রজাহিতৈষী  ছিল না তা বর্তমান কালের একনায়ক তন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি মানবিক ছিল। 


16. নেপোলিয়ন রাশিয়া অভিযান কেন করেন ?

টিলসিটের সন্ধির (১৮০৭ খ্রি:) দ্বারা ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলেও এই সম্পর্ক শীঘ্রই ভেঙে যায়। ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান ১৮১২ খ্রি: রাশিয়া আক্রমণ করেন। কারণ -

i) টিলসিটের সন্ধির ত্রুটি - টিলসিটের সন্ধিতে নেপোলিয়ান তুরস্ক ও সুইডেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। ফলে রুশ জার ক্ষুব্ধ হন। 

ii) ওল্ডেনবার্গ দখল - মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করায় নেপোলিয়ান রুশ জারের ভগ্নিপতি ওল্ডেনবার্গের ডিউকের রাজ্যটি দখল করে নেয় -ফলে জার অত্যন্ত ক্ষুব্দ হন। 

iii) ফ্রান্স ও অষ্ট্রিয়ার ঘনিষ্ঠতা - নেপোলিয়ান অষ্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ বংশীয় রাজকন্যা মেরি লুইসাকে বিবাহ করলে রুশ জার আতঙ্কিত হন যে ফ্রান্স ও অষ্ট্রিয়া মিলিত হয়ে রাশিয়ার ক্ষতি করবে। 

iv) মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা - রাশিয়া প্রথমে নেপোলিয়ানের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও ১৮১০ খ্রি: এই ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করে। ফলে রাশিয়ার ওপর নেপোলিয়ান ক্ষুব্ধ হন। 


17. নেপোলিয়ানের রাশিয়া অভিযানের বিবরণ দাও। 

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান 1812 খ্রিস্টাব্দের 26 শে জুন, তার মহান সেনাদলের 6 লক্ষাধিক সৈন্য নিয়ে রাশিয়া আক্রমন করেন। 

রাশিয়া আক্রমনের বিবরণ -

i) পোড়ামাটি নীতি - রুশ বাহিনী সম্মুখ যুদ্ধে না গিয়ে ক্রমাগত পিছু হটতে থাকে। তারা রাস্তাঘাট, সেতু ও জলপথ ধ্বংস করে, মাঠের ও গোলার ফসল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এবং পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দেয়। এটি পোড়ামাটি নীতি নামে পরিচিত। এর ফলে ফরাসি বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরে ঢুকে খাদ্য ও পানীয় জলের অভাবে সংকটের সম্মুখীন হয়। 

ii) বোরোডিনোর যুদ্ধ - সেনাপতি কুতুজবের নির্দেশে রুশ বাহিনী ফরাসি বাহিনীকে প্রতিরোধ করলে বোরোডিনোর যুদ্ধে নেপোলিয়ান তাদের পরাজিত করেন। 

iii) মস্কো অভিযান - বোরোডিনোতে জয়লাভের পর ফরাসি বাহিনী 75 মাইল দুর্গম পথ অতিক্রম করে মস্কোয় পৌঁছায়। পথে খাদ্যাভাব, তীব্র শীত, বাসস্থানের অভাব ও মহামারিতে আক্রান্ত প্রচুর ফরাসি সৈন্যের মৃত্যু হয়। 

iv) রাশিয়া ত্যাগ - এই সময় রাশিয়ায় তীব্র শীত, তুষারপাত, ঝড়, চরম খাদ্যাভাব ও চাইফাস নামক জ্বরের প্রকপ শুরু হলে দিশেহারা নেপোলিয়ান তার মহান সেনাদলের অবশিষ্ট সেনাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরার নির্দেশ দেন। 

v) স্বদেশে ফেরা - স্বদেশে ফেরার পথেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যজন্তুর আক্রমণ ও গেরিলা রুশ বাহিনীর আক্রমণে প্রচুর ফরাসি সেনার মৃত্যু হয়। মাত্র 30-50 হাজার সেনা দেশে ফিরতে সক্ষম হয়। 


18. টীকা লেখ - কোড নেপোলিয়ান। 

নেপোলিয়ানের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় কীর্তি হল “কোড নেপোলিয়ান”। 

i. আইনসমূহ রচনা - নেপোলিয়ানের উদ্যোগে গঠিত কমিশন 1804 খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের জন্য নতুন আইনসমূহ রচনা করেন। এটি “কোড নেপোলিয়ান” নামে পরিচিত। 

ii. আইনসমূহের শ্রেণিবিভাগ - কোড নেপোলিয়ানে মোট 2287 টি আইন ছিল। এর আইনগুলি মূলত তিনভাগে বিভক্ত ছিল।  যথা - দেওয়ানি আইন, ফৌজদারি আইন এবং বাণিজ্যিক আইন। 

iii. বৈশিষ্ট্য - 

a. আইন এর চোখে দেশের সকল নাগরিকের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

b. সামন্ততান্ত্রিক অসাম্যের বিলোপ ঘটানো হয়। 

c. যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। 

d. সম্পত্তির অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 

e. অপরাধের শাস্তি হিসেবে জরিমানা, কারাদন্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, মৃত্যুদন্ড প্রভৃতি ব্যবস্থা করা হয়। 

iv. ত্রুটি - “কোড নেপোলিয়ানের বিভিন্ন ত্রুটি ছিল। যেমন - এতে সমাজে নারীর মর্যাদা হ্রাস করা হয়। স্ত্রীর উপর স্বামীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। পারিবারিক সম্পত্তির অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করা হয়। শ্রমিক শ্রেণি তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। 


19. মহাদেশীয় অবরোধ বলতে কী বোঝ। 

ভূমিকা - নেপোলিয়ান ইউরোপে ইংরেজ আধিপত্য বিনষ্ট করার জন্য ইংল্যান্ড আক্রমণের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল নৌ শক্তিতে ইংল্যান্ড ছিল অপ্রতিহত এবং তার সামুদ্রিক আধিপত্য নেপোলিয়ানের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এই অবস্থায় ইংল্যান্ডকে সমুচিত শিক্ষা দিতে নেপোলিয়ান মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন। 

কারন - 1806 খ্রি: মধ্যে নেপোলিয়ান ইংল্যান্ড বাদে সমগ্র ইউরোপীয় স্থলভাগের ভাগ্য বিধাতা হন। টিলসিটের সন্ধির পর ইউরোপের উপর তাঁর আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ডের অপরাজেয় নৌশক্তিকে দমন করার জন্য নেপোলিয়ান ইউরোপের ভূখণ্ডে যে ব্যবস্থা চালু করে তা “মহাদেশীয় অবরোধ” প্রথা নামে পরিচিত। এই প্রথার দ্বারা নেপোলিয়ান ইংল্যান্ডের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করতে চেয়েছিল। অর্থাৎ ইংল্যান্ডকে হাতে মারতে না পেরে ভাতে মারার পরিকল্পনা করেন। 

বিভিন্ন ডিক্রি ঘোষণা - মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা কার্যকরী করতে নেপোলিয়ান  1806-1810 খ্রি: মধ্যে বেশ কয়েকটি ডিক্রি জারি করেন। 1806 খ্রি: বার্লিন ডিক্রি জারি করে ইংল্যান্ডে তৈরি কোনো জিনিসের ইউরোপের বাজারে প্রবেশ নিষেধ করেন 1807 খ্রি:, মিলান ডিক্রি জারি করে সমগ্র ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবরোধ ঘোষণা করে। ইংল্যান্ড ও তার মিত্রদেশ বা তার উপনিবেশের কোনো বন্দরের নিরপেক্ষ দেশের জাহাজের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। 1807 খ্রিষ্টাব্দে ওয়ারশ ডিক্রি ও 1810 খ্রি: ফন্টেন ব্লু ডিক্রির মাধ্যমে ফ্রান্স অধিকৃত অঞ্চলে কোনো জাহাজে ব্রিটিশ পণ্য এলে তা পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ইংল্যান্ড মহাদেশীয় অবরোধের প্রত্যুত্তরে  1807 খ্রিষ্টাব্দে  “ অডারস ইন কাউন্সিল” জারি করে ফ্রান্স ও তার মিত্রদেশের ওপর অবরোধ ঘোষণা করেন। এছাড়া কোনো নিরপেক্ষ দেশ যদি ফ্রান্সে পণ্য পাঠাতে চায় তবে সেই জাহাজকে আগেই ইংল্যান্ডের কোনো বন্দরে এসে লাইসেন্স ফি অনুমতি নিতে হবে। 

ফলাফল - মহাদেশীয় অবরোধ প্রথার ফলে ইউরোপে ব্যবসা -বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দুর্লভ ও দুর্মূল্য হওয়ায় নেপোলিয়ানের প্রতি সমগ্র ইউরোপে এক ঘৃণার সৃষ্টি হয়। ইংল্যান্ড নৌশক্তিতে বলিয়ান হয়। নেপোলিয়ানের যে উদ্দেশ্য ছিল, তা ব্যর্থ হয়েছিল এই অবরোধ কার্যকর করার মতো নৌশক্তি নেপোলিয়ানের ছিল না। এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে গিয়ে নেপোলিয়ান পোপের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। পর্তুগাল আক্রমণ করে বিফল হন, রাশিয়া আক্রমণ করে তার বিখ্যাত গ্র্যান্ড আর্মি হারান। ফলে মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা তার পতনের পথ সুগম করে। এই কারনে মহাদেশীয় অবরোধ প্রথাকে তার একটি মহা ভুল বলে মনে করা হয়। 


20. নেপোলিয়ানের পতনের কারনগুলি লেখ। 

উঃ - ভূমিকা - নেপোলিয়ান অসামান্য প্রতিভাবলে প্রায় সমগ্র ইউরোপব্যাপী এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করলেও তার সাম্রাজ্য খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। 1807 খ্রি: টিলসিটের সন্ধির মাধ্যমে তাঁর সাম্রাজ্যের চরম বিস্তার ঘটলেও এর পর থেকেই নেপোলিয়ানের পতনের সূত্রপাত হয়েছিল। তাঁর পতনের পিছনে যে গুরুত্বপূর্ণ কারনগুলি ছিল। সেগুলি হল -

1. অপরিমিত উচ্চাকাঙ্খা: সম্রাট নেপোলিয়ানের উচ্চাকাঙ্খা ছিল অপরিমিত। সামরিক শক্তির জোরে তিনি তাঁর সাম্রাজ্যের যতই বিস্তৃতী ঘটান ততই তাঁর উচ্চাকাঙ্খা বাড়তে থাকে। এই বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনা করতে যে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টির প্রয়োজন হয় তা তাঁর ছিল না। তিনি সমগ্র ইউরোপের অধিশ্বর হতে চেয়েছিলেন। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তিনি সকল দেশের সাধারণ শত্রুতে পরিণত হন। 

2. সাম্রাজ্যের বিশালতা: নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যের বিস্তার ছিল বিশাল। প্রায় সমগ্র ইউরোপ তাঁর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই বিশাল সাম্রাজ্যের ঐক্য দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা খুব সহজ কাজ ছিল না। এছাড়া এরূপ বিশাল সাম্রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনার জন্য উপযুক্ত সংগঠন ও পরিকাঠামো তিনি গড়ে তুলতে পারেননি। 

3. মস্কো অভিযান: মস্কো অভিযান ছিল নেপোলিয়নের এক ভ্রান্ত পদক্ষেপ। রাশিয়া আক্রমণ করে তিনি সে দেশের জনগণের কাছ থেকে এক বিরাট জাতীয় প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল প্রচন্ড শীত ও খাদ্যাভাব। ফলে নেপোলিয়ানের ‘গ্রান্ড আর্মি’ প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। এই যুদ্ধে পরাজয় তার পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল। 

4. মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা - নেপোলিয়নের পতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা। এটি ছিল ইংল্যান্ডকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে এক অর্থনৈতিক অবরোধ পরিকল্পনা কিন্তু এই ব্যবস্থাকে কার্যকরি করতে গিয়ে তাঁকে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করতে হয়েছিল। সকল দেশের জাতীয় প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়ে তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হন। এই অবরোধ কার্যকর করার মতো নৌশক্তিও তার ছিল না। এইভাবে মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা তাঁর পতনে অনুঘটকের কাজ করেছিল। 

5. জাতীয়তাবাদী আন্দোলন - নেপোলিয়ান ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, যেমন - জার্মানি, স্পেন, রাশিয়া, ইটালি, পোল্যান্ড জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রচার করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সাম্রাজ্যবাদী অভিযান ও স্বৈরাচারী শাসনের জন্য এই দেশগুলির জনগণ তারই প্রচারিত জাতীয়তাবাদী আদর্শের অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। 

21. মিলান ডিক্রি কী ?

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান 1807 খ্রিস্টাব্দে মিলান শহর থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ ঘোষণা করে বলেন যে -

1. কোনো নিরপেক্ষ বা মিত্রদেশ অবরুদ্ধ বন্দরে জাহাজ পাঠালে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। 

2. কোনো নিরপেক্ষ দেশের জাহাজ ইংল্যান্ডে প্রবেশ করলে তা শত্রু দেশের জাহাজ বলে গণ্য হবে। এই ঘোষণা “মিলান ডিক্রি” নামে পরিচিত। 

22. ফনটেনব্লু ডিক্রি কী ?

পোর্তুগাল মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করলে নেপোলিয়ান স্পেনের সঙ্গে ফনটেনব্লুর গোপন সন্ধি স্বাক্ষর করেন। এই সন্ধির দ্বারা স্থির হয়, 1) ফ্রান্স ও স্পেনের যৌথবাহিনী পোর্তুগাল আক্রমণ করবে। 

2. যুদ্ধে জয়লাভের পর পোর্তুগাল ও তার উপনিবেশগুলি ফ্রান্স ও স্পেন ভাগ করে নেবে। 




Ratings
No reviews yet, be the first one to review the product.