সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো (প্রশ্নমান- 1)

1. কোশের আবিস্কারক হলেন-

a. রবার্ট হুক

b. রবার্ট ব্রাউন

c. লিউয়েন হক

d. ক্যামিলো গলগি

2. ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরের প্রধান উপাদান কোনটি ?

a. পেকটিন

b. সেলুলোজ

c. পেপটাইডোগ্লাইকন

d. হেমিসেলুলোজ

3. উদ্ভিদকোশের সবথেকে বাইরের আবরণটির নাম হল-

a. ক্যাপসুল

b. কোশপর্দা

c. নিউক্লিওপর্দা

d. কোষপ্রাচীর

4. নিম্নলিখিত কোনটি উদ্ভিদ কোশপ্রাচীরের মুখ্য উপাদান?

a. সেলুলোজ

b. হেমিসেলুলোজ

c. কাইটিন

d. পেপটাইডোগ্লাইক্যান

5. কোশপর্দার উপাদান হিসাবে কোন লিপিডটি উপস্থিত থাকে?

a. মিউকোলিপিড

b. ফসফোলিপিড

c. সালফোলিপিড

d. মিউকোপলি স্যাকারাইড

6. কোশপর্দা যে প্রকৃতির তা হল-

a. ভেদ্য

b. অভেদ্য

c. অর্ধভেদ্য

d. প্রভেদক ভেদ্য

7. কোন মডেল কোশপর্দার গঠনকে শীতল সাগরে ভাসমান হিমবাহের সঙ্গে তুলনা করে?

a. একক পর্দা মডেল

b. দ্বিএকক পর্দা মডেল

c. ড্যানিয়েল ও ডেভসন মডেল

d. ফ্লুইড মোজাইক মডেল

8. উদ্ভিদকোশে কোশান্তর সংযোগ স্থাপিত হয় যার দ্বারা, তা হল-

a. গ্যাপ জাংশন

b. টাইট জাংশন

c. ডেসমোজোম

d. প্লাজমোডেসমাটা

9. নিউক্লিয়াসের ধাত্রের নাম হল-

a. স্ট্রোমা

b. ক্যারিওলিম্ফ

c. প্রোটোপ্লাজম

d. হায়ালোপ্লাজম

10. নিউক্লিওপর্দা হল-

a. একক ও রন্ধ্রযুক্ত

b. একক ও রন্ধ্রবিহীন

c. দ্বিএকক ও রন্ধ্রযুক্ত

d. দ্বিএকক ও রন্ধ্রবিহীন

11. নিউক্লিয়াস ব্যতীত আরও যে দুটি অঙ্গাণুতে DNA উপস্থিত, তা হল-

a. মাইটোকনড্রিয়া ও গলগিবডি

b. মাইটোকনড্রিয়া ও প্লাস্টিড

c. মাইটোকনড্রিয়া ও প্লাস্টিড

d. গলগিবডি ও রাইবোজোম

12. RNA থেকে DNA তৈরি হওয়ার পদ্ধতিটি হল-

a. ট্রান্সক্রিপশন

b. ট্রান্সলেশন

c. রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন

d. রেপ্লিকেশন

13. লিপিড সংশ্লেষের সঙ্গে জড়িত-

a. RER

b. SER

c. রাইবোজোম

d. গলগি বডি

14. মাইটোকনড্রিয়ার অন্তঃপর্দার ভাঁজগুলিকে কি বলা হয়?

a. থাইলাকয়েড

b. ল্যামেলা

c. ক্রিস্টি

d. মেসোজোম

15. মাইটোকনড্রিয়ার প্রধান কাজ হল -

a. শ্বসন

b. ক্ষরণ

c. রেচন

d. পাচন

16. প্রোক্যারিওটিক কোশের রাইবোজোম যে প্রকৃতির হয়, তা হল-

a. 80S

b. 40S

c. 70S

d. 55S

17. কোণ অঙ্গাণুটি মানুষ ও ব্যাকটেরিয়া উভয়ের কোশেই উপস্থিত?

a. গলগি বডি

b. রাইবোজোম

c. লাইসোজোম

d. মাইটোকনড্রিয়া

18. রাইবোজোমের গঠনগত উপাদান কি?

a. প্রোটিন

b. rRNA

c. rRNA ও প্রোটিন

d. rRNA ও লিপিড

19. যে অঙ্গাণুটি প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে তা হল-

a. রাইবোজোম

b. সেন্ট্রিওল

c. লাইসোজোম

d. গলগি বস্তু

20. রঙিন ফুলের পাপড়িতে উপস্থিত থাকে-

a. ক্রোমোপ্লাস্ট

b. অ্যামাইলোপ্লাস্ট

c. ক্লোরোপ্লাস্ট

d. অ্যালিউরোনপ্লাস্ট

21. গলগি বডি-র প্রধান কাজ কি?

a. রেচন

b. শ্বসন

c. ক্ষরণ

d. পাচন

22. কোন কোশীয় অঙ্গাণুটি আদ্রবিশ্লেষক উৎসেচকযুক্ত হয়?

a. লাইসোজোম

b. মাইটোকনড্রিয়া

c. গলগি বডি

d. রাইবোজোম

23. কোশের সঞ্চয়ভাণ্ডার বলা হয়-

a. সেন্ট্রোজোম

b. গলগি বডি

c. রাইবোজোম

d. লাইসোজোম -কে

24. কোন কোশীয় অঙ্গাণুতে লিংকার অংশ থাকে?

a. কোশগহ্বর-এ

b. রাইবোজোম-এ

c. লাইসোজোম-এ

d. সেন্ট্রিওল -এ

25. নিম্নলিখিত যে কোশীয় অঙ্গাণুটি শুক্রাণুর পুচ্ছ গঠনে সাহায্য করে, তা হল-

a. রাইবোজোম

b. লাইসোজোম

c. গলগি বডি

d. সেন্ট্রোজোম

26. কোশকে দৃঢ়তা প্রদান করে-

a. প্লাস্টিড

b. মাইটোকনড্রিয়া

c. গলগি বডি

d. মাইক্রোটিউবিউল

27. মাইক্রোটিউবিউলের সাংগঠনিক উপাদান কোনটি?

a. পিলিন প্রোটিন

b. অ্যালবুমিন প্রোটিন

c. টিউবিউলিন প্রোটিন

d. ফ্ল্যাজেলিন প্রোটিন

28. কোশদেহ কোথায় থাকে?

a. নিউরোন-এ

b. নিউরোগ্লিয়া-য়

c. অ্যাক্সন-এ

d. নেফ্রন-এ

শুন্যস্থান পূরণ করো। (প্রশ্নমান-1)

1. আদিকোশ বলা হয় এককোশী প্রোক্যারিওটিক কোশ-কে।

2. সুগঠিত নিউক্লিয়াসযুক্ত কোশকে ইউক্যারিওটিক কোশ বলা হয়।

3. নিউক্লিওয়েড হল প্রোক্যারিওটিক কোশের প্রজননিক বস্তু।

4. একটি নিউক্লিয়াসবিহীন উদ্ভিদকোশ হল সিভনল।

5. একটি নিউক্লিয়াসবিহীন প্রাণীকোশ হল লোহিত রক্তকণিকা।

6. পরিণত উদ্ভিদকোশে কোশগহ্বরকে ঘিরে থাকা সাইটোপ্লাজমের পাতলা স্তরকে বলা হয় প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল।

7. বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহকরূপে কাজ করে কোশের নিউক্লিয়াস।

8. ‘Cell Centre’ বলা হয় নিউক্লিয়াস কে।

9. যে অঙ্গাণু ER থেকে সৃষ্টি হয় তা হল গলগি বডি।

10. গলগি বডির কাছাকাছি কোশীয় অঙ্গাণুবিহীন অঞ্চলকে বলা হয় জোন অব এক্সক্লুশন।

11. ‘ক্লডের দানা’ বলা হয় রাইবোজোম কে।

12. বর্নহীন প্লাস্টিডকে বলা হয় লিউকোপ্লাস্টিড।

13. কোশবিভাজনের সময় বেমতন্তু গঠন করে সেন্ট্রোজোম।

14. দুটি সেন্ট্রিওলকে একত্রে ডিপ্লোজোম বলা হয়।

ঠিক বা ভুল নির্বাচন করো (প্রশ্নমান-1)

1. প্রোক্যারিওটিক কোশে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। -ঠিক/ভুল।

2. ইউক্যারিওটিক কোশে রাইবোজোম থাকে না।-ঠিক/ভুল। থাকে

3. কোশপ্রাচীরের মধ্যপর্দা গঠিত হয় ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম পেকটেট দ্বারা। -ঠিক/ভুল।

4. সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াসকে একত্রে প্রোটোপ্লাজম বলে। -ঠিক/ভুল।

5. গলগি বডি ডিম্বাণুর অ্যাক্রোজোম তৈরি করে। -ঠিক/ভুল। শুক্রাণুর

6. 80S রাইবোজোম থাকে ইউক্যারিওটিক কোশে। ঠিক/ভুল

7. কোশ বিভাজনের সময় ক্রোমাটিন জালিকা থেকে ক্রোমোজোম তৈরি হয়। ঠিক/ভুল

সমানুপাত নির্নয় করো। (প্রশ্নমান-1)

1. মাইটোকনড্রিয়া : ক্রিস্টি::____:গ্রানা। -ক্লোরোপ্লাস্টিড

2. রাইবোজোম : প্রোটিন কারখানা :: নিউক্লিয়াস :____ কোশের মস্তিস্ক

3. মানুষ : বহুকোশী :: ____:এককোশী -অ্যামিবা

4. কোশপ্রাচীর : _____:: কোশপর্দা : সজীব -মৃত

5. _____: ভেদ্য :: কোশপর্দা : অর্ধভেদ্য -কোশপ্রাচীর

দু-একটি শব্দে উত্তর দাও। (প্রশ্নমান-1)

1. জীবদেহের গঠনগত ও কার্যগত একককে কি বলা হয়?

কোশ

2. কোশতত্ব বা কোশবাদের প্রবর্তক কে?

জার্মান উদ্ভিদবিদ স্লেইডেন ও জার্মান প্রাণীবিদ সোয়ান।

3. ক্ষুদ্রতম কোশ কোনটি?

মাইকোপ্লাজমা

4. উদ্ভিদকোশের সর্ববৃহৎ কোশীয় অঙ্গাণুটির নাম কি?

প্লাস্টিড

5. প্রাণীকোশের সর্ববৃহৎ কোশীয় অঙ্গাণুটির নাম কি?

মাইটোকনড্রিয়া

6. ক্ষুদ্রতম কোশীয় অঙ্গাণুটির নাম লেখ।

রাইবোজোম

7. একক পর্দাবৃত দুটি অঙ্গাণুর নাম লেখ।

এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা ও গলগি বডি

8. দ্বি-একক পর্দাবৃত দুটি অঙ্গাণুর নাম লেখ।

মাইটোকনড্রিয়া ও প্লাস্টিড

9. দুটি পর্দাবিহীন অঙ্গাণুর নাম লেখ।

রাইবোজোম ও সেন্ট্রোজোম

10. একটি অর্ধস্বপ্রজননক্ষম কোশীয় অঙ্গাণুর উদাহরণ দাও।

মাইটোকনড্রিয়া

11. কোন অঙ্গাণু ‘কোশের শক্তিঘর’ নামে পরিচিত?
মাইটোকনড্রিয়া

12. ক্লোরোপ্লাস্টিডের গঠনগত একক কি?

থাইলাকয়েড

13. এমন একটি কোশীয় অঙ্গাণুর উদাহরণ দাও যা ইউক্যারিওটিক ও প্রোক্যারিওটিক উভয় কোশেই পাওয়া যায়?

রাইবোজোম

14. কোশে ‘প্রোটিন ফ্যাক্টরি’ বলা হয় কোন অঙ্গানুকে?

রাইবোজোম

15. ‘আত্মঘাতী থলি’ কাকে বলা হয়?

লাইসোজোম -কে

16. কোশের মস্তিস্ক কাকে বলা হয়?

নিউক্লিয়াস -কে

17. SER-র পুরো নাম কি?

Smooth Endoplasmic Reticulum

18. RER-র পুরো নাম কি?

Rough Endoplasmic Reticulum

19. খালি চোখে দেখা যায় এবং বৃহত্তম একটি প্রাণীকোশের উদাহরণ দাও।

উটপাখির অনিষিক্ত ডিম।

20. এমন একটি উদ্ভিদকোশের নাম লেখ যেখানে কোশপ্রাচীর থাকে না।

উদ্ভিদ জননকোশ

21. কোন কোশীয় অঙ্গাণুতে সালোকসংশ্লেষ হয়?

ক্লোরোপ্লাস্টিড -এ

22. মানুষের দেহের কোন অংশে গলগি বডি থাকে না ?

পরিণত লোহিত রক্ত কণিকায়

23. উদ্ভিদকোশের কোন অঙ্গাণু O2 শোষণ করে এবং কোন অঙ্গাণু O2 বর্জন করে?

মাইটোকনড্রিয়া O2 শোষণ করে এবং ক্লোরোপ্লাস্টিড O2 বর্জন করে।

24. সেন্ট্রিওলের প্রাচীর কি নিয়ে গঠিত?

৭টি ত্রয়ী অনুনালিকা নিয়ে

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (প্রশ্নমান-2)

1. প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল কি?

পরিণত উদ্ভিদকোশে কোশগহ্বর বা ভ্যাকুওলগুলি পরস্পর মিলিত হয়ে একটি বড়ো ভ্যাকুওল তৈরি করে, ফলে নিউক্লিয়াসসহ সাইটোপ্লাজম কোশপ্রাচীরের ভিতরের দিকে পরিধি বরাবর বিন্যস্ত থাকে। ভ্যাকুওলকে বেস্টন করে সাইটোপ্লাজমের এইরকম বিন্যাসকে প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল বলে।

2. মাইক্রোভিলি কি? এর একটি কাজ উল্লেখ কর।

প্রাণীকোশের কোশপর্দা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভাঁজ হয়ে গিয়ে কোশের বাইরের দিকে যেসমস্ত আঙুলের মতো প্রবর্ধক সৃষ্টি করে, তাদের মাইক্রোভিলি বলে।

কাজ- ক্ষুদ্রান্ত্রের আবরণী কোশে বর্তমান মাইক্রোভিলি শোষণতল বৃদ্ধি করে এবং খাদ্যরস দ্রুত শোষণ করতে সাহায্য করে।

3. কেন মাইটোকনড্রিয়াকে ‘কোশের শক্তিঘর’ বলে?

মাইটোকনড্রিয়ায় সবাত শোষণ প্রক্রিয়ায় কোশের খাদ্যবস্তু (কার্বোহাইড্রেট) জারিত হয়ে উচ্চশক্তিযুক্ত যৌগ বা ATP উৎপন্ন হয়, যা কোশের সমস্ত জৈবনিক ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়, তাই মাইটোকনড্রিয়াকে ‘কোশের শক্তিঘর’ বলা হয়।

4. লাইসোজোমকে কেন ‘আত্মঘাতী থলি’ বলা হয়?

লাইসোজোমের মধ্যে আদ্রবিশ্লেষক উৎসেচক থাকে। কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে লাইসোজোম নিজ কোশকেই পাচিত করে এবং ধ্বংস করে দেয়। তাই একে ‘আত্মঘাতী থলি’ বলে।

5. ‘জোন অফ এক্সক্লুশন’ কি?

গলগি বডির চারপাশে যে সাইটোপ্লাজমীয় অংশ থাকে সেখানে কোনো কোশীয় অঙ্গাণু থাকে না। এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা থেকে গলগি বস্তু পর্যন্ত বিস্তৃত এই অঙ্গাণুবিহীন সাইটোপ্লাজমীয় অঞ্চলকে ‘জোন অফ এক্সক্লুশন’ বলে।

6. রাইবোজোমকে ‘প্রোটিন ফ্যাক্টরি’ বলা হয় কেন?

রাইবোজোম প্রোটিন সংশ্লেষের সময় অ্যামিনো অ্যাসিডকে স্থান প্রদান করে এবং প্রোটিন সংশ্লেষে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। প্রোটিন সংশ্লেষের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক ক্ষরণ করে এবং mRNA-এর কোড ট্রান্সলেট করে বিশেষ বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিডগুলি একত্রিত করে বিশেষ বিশেষ প্রোটিন গঠন করে। তাই রাইবোজোমকে কোশের প্রোটিন ফ্যাক্টরি’ বলা হয়।

7. কেন ‘নিউক্লিয়াসকে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলা হয়?

নিউক্লিয়াস মধ্যস্থ ক্রোমোজোমে যে জেনেটিক তথ্য থাকে তা সংশ্লিষ্ট কোশটির সমস্ত জৈবনিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, কোশ বিভাজনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে এবং বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলিকে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে বহন করে। তাই একে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলা হয়।

8. মানুষের কোন কোশটি বিভাজিত হতে পারে না এবং এর কারণ কি?

মানুষের স্নায়ুকোশ বিভাজিত হতে পারে না কারণ- স্নায়ুকোশের সেন্ট্রোজোমটি নিষ্ক্রিয় প্রকৃতির হয়।

9. কোশগহ্বরকে ‘কোশের ভাঁড়ারঘর’ বলার কারণ কি?

কোশগহ্বরের কোশরসে শর্করা, অজৈব লবন, বিভিন্ন রেচন পদার্থ, ক্ষরণজাত পদার্থ, রঞ্জক পদার্থ সঞ্চিত থাকে। এরা কোশের প্রয়োজনমতো ব্যবহৃত হয় বা কোশ থেকে বর্জিত হয়। তাই কোশগহ্বরকে ‘কোশের ভাঁড়ারঘর’ বলে।

10. প্লাজমোডেসমাটা কাকে বলে? এর গুরুত্ব লেখ।

কোশপ্রাচীরের ছিদ্রের মধ্য দিয়ে কোশান্তর সংযোগরক্ষাকারী সাইটোপ্লাজমীয় অংশকে প্লাজমোডেসমাটা বলে।

গুরুত্ব- a) প্লাজমোডেসমাটা পাশাপাশি অবস্থিত কোশগুলির মধ্যে সাইটোপ্লাজমীয় সংযোগ স্থাপন করে।

b) এর মাধ্যমে জল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদার্থ কোশের মধ্যে প্রবেশ করে।

রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর (প্রশ্নমান-5)

1. একটি উদ্ভিদকোশের গঠন চিত্রসহ আলোচনা কর।

উদ্ভিদকোশের প্রধানত দুটি অংশ-

A) কোশপ্রাচীর এবং B) প্রোটোপ্লাজম। এই কোশপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে একটি সজীব কোশপর্দা থাকে।

A) কোশপ্রাচীর- উদ্ভিদকোশের কোশপ্রাচীর জড়, স্থিতিস্থাপক, ভেদ্য ও পুরু। এটি তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত- মুখ্য প্রাচীর, গৌণ প্রাচীর ও মধ্যচ্ছদা। সেলুলোজ হল কোশপ্রাচীরের মূল উপাদান।

কাজ-কোশপ্রাচীর কোশকে আকৃতি প্রদান করে, যান্ত্রিক শক্তি প্রদান করে এবং কোশমধ্যস্থ সজীব অংশকে রক্ষা করে।

B) কোশপর্দা - কোশপর্দা কোশপ্রাচীরের ভিতরে সাইটোপ্লাজমকে ঘিরে থাকে। এটি অর্ধভেদ্য, সজীব, ত্রিস্তরীয় একক পর্দা।

কাজ- কোশকে আকৃতি প্রদান করে, প্রোটোপ্লাজমকে রক্ষা করে এবং পিনোসাইটোসিস ও ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে।

C) প্রোটোপ্লাজম - কোশ মধ্যস্থ সম্পূর্ণ সজীব অংশ হল প্রোটোপ্লাজম। এটি নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম নিয়ে গঠিত।

i) নিউক্লিয়াস- কোশের প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, প্রায় গোলাকার ও দ্বি-একক পর্দাবেষ্টিত অংশ। এর চারটি অংশ রয়েছে- নিউক্লিয়পর্দা, নিউক্লিয়জালিকা, নিউক্লিওপ্লাজম,ও নিউক্লিওলাস।

কাজ- কোশের যাবতীয় জীবজ ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাই একে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলে।

ii) সাইটোপ্লাজম- নিউক্লিয়াস ও কোশঅঙ্গাণু ছাড়া প্রোটোপ্লাজমের বর্নহীন, জেলির মতো, অর্ধস্বচ্ছ, সজীব অংশ হল সাইটোপ্লাজম। এটি এক্টোপ্লাজম ও এন্ডোপ্লাজম এই দুটি ভাগে বিভক্ত।

কাজ- কোশীয় অঙ্গানুকে ধরে রাখে এবং বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে।

সাইটোপ্লাজমের মধ্যে যেসমস্ত কোশ অঙ্গাণু থাকে সেগুলি হল-

i) প্লাস্টিড- ছত্রাক ছাড়া প্রায় সব উদ্ভিদ কোশের সাইটোপ্লাজমে এটি দেখা যায়। এটি দ্বিএকক পর্দাবেষ্টিত, গোলাকার, উপবৃত্তাকার, তারকাকার হয়ে থাকে। প্রধানত তিন ধরনের প্লাস্টিড দেখা যায়- ক্লোরোপ্লাস্টিড (সবুজ), ক্রোমোপ্লাস্টিড (লাল, হলুদ, কমলা, বাদামি) ও লিউকোপ্লাস্টিড (বর্নহীন)

কাজ- সালোকসংশ্লেষ,পরাগযোগ ও খাদ্য সঞ্চয়ে সাহায্য করে।

ii) মাইটোকনড্রিয়া- সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা দ্বিএকক পর্দাবেষ্টিত, ছোট ছোট গোলাকার, ডিম্বাকার বা দণ্ডাকার কোশ অঙ্গাণু।

কাজ- ATP অনু সংশ্লেষের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন হয়। কোশীয় শ্বসনে সাহায্য করে।

iii) গলগি বডি- সাইটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াসের কাছে অবস্থিত একক পর্দাবেষ্টিত চ্যাপ্টা থলির মতো ও ছোট গহ্বরের মতো অঙ্গাণু।

কাজ- কোশের ক্ষরণ কাজে অংশগ্রহন করে।

iv) রাইবোজোম-এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকার গায়ে, কোশের নিউক্লিওপ্লাজমে, সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত RNA ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত, পর্দাবিহীন দানার মতো অঙ্গাণু।

কাজ- প্রোটিন সংশ্লেষ করা।

v) এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা- একক পর্দাবেষ্টিত, নলাকার কোশীয় অঙ্গাণু যা সাইটোপ্লাজমকে অনেকগুলি অনিয়মিত প্রকোষ্ঠে ভাগ করে। এরা সিস্টারনি, ভেসিকল ও টিউবিউল নিয়ে গঠিত।

কাজ- সাইটোপ্লাজমের কাঠামো গঠন করে। মাইটোকনড্রিয়া, গলগি বডি প্রভৃতি কোশ অঙ্গাণু সৃষ্টি করে।

vi) কোশগহ্বর - কোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত ফাঁকা স্থান। এটি সাইটোপ্লাজমবিহীন হয় এবং পরিণত উদ্ভিদকোশে একটি বা দুটি বড়ো কোশগহ্বর থাকে।

কাজ- কোশান্তর অভিস্রবনে সাহায্য় করে।

2. চিত্রসহ একটি প্রাণীকোশের গঠন আলোচনা কর।

প্রাণীকোশ প্রধানত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত

A) কোশপর্দা

B) প্রোটোপ্লাজম

A) কোশপর্দা - প্রাণীকোশের প্রোটোপ্লাজমের বাইরে অবস্থিত, অর্ধভেদ্য, স্থিতিস্থাপক, ত্রিস্তরীয় একক পর্দা দ্বারা গঠিত।

কাজ- কোশকে আকৃতি প্রদান করে, প্রোটোপ্লাজমকে রক্ষা করে এবং পিনোসাইটোসিস ও ফ্যাগোসাইটোসিস পদ্ধতিতে তরল ও কঠিন বস্তু গ্রহণ করে।

B) প্রোটোপ্লাজম- কোশমধ্যস্থ সম্পূর্ণ সজীব অংশ হল প্রোটোপ্লাজম। এটি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত-

a)নিউক্লিয়াস, b) সাইটোপ্লাজম।

a) নিউক্লিয়াস- প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে সবচেয়ে ঘন, প্রায় গোলাকার ও পর্দাবৃত অংশ। এর চারটি অংশ রয়েছে - নিউক্লীয় পর্দা, নিউক্লিয় রস বা নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয় জালিকা এবং নিউক্লিওলাস।

কাজ- নিউক্লিয়াস প্রোটোপ্লাজমের সবরকমের জীবজ ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাই একে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলে। নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমের মধ্যে DNA থাকে যা বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলিকে এক প্রজন্ম থেকে অন্য
প্রজন্মে বহন করে।

b) সাইটোপ্লাজম- নিউক্লিয়াস বাদে প্রোটোপ্লাজমের বর্নহীন, জেলির মতো অর্ধস্বচ্ছ তরলকে সাইটোপ্লাজম বলে। এর মধ্যেই কোশীয় অঙ্গাণু, ভ্যাকুওল ও অজীবীয় বস্তু থাকে।

কাজ- নিউক্লিয়াস, কোশ অঙ্গাণু ইত্যাদির ধাত্ৰ হিসাবে কাজ করে।

সাইটোপ্লাজমের মধ্যে যেসব কোশীয় অঙ্গাণু থাকে সেগুলি হল -

i) সেন্ট্রোজোম- এটি শুধুমাত্র প্রাণীকোশে থাকে। নিউক্লিয়াসের কাছে অবস্থিত। এটি দুটি সেন্ট্রিওল, সেন্ট্রোস্ফিয়ার নিয়ে গঠিত।

কাজ- প্রধান কাজ হল কোশ বিভাজনের সময় বেমতন্তু গঠনে সাহায্য করা। এছাড়াও শুক্রাণুর পুচ্ছ গঠন করে।

ii) মাইটোকনড্রিয়া - সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থিত দ্বিএকক পর্দাবেষ্টিত, ছোট ছোট গোলাকার, ডিম্বাকার বা দন্তাকার কোশীয় অঙ্গাণু।

কাজ- প্রধান কাজ হল কোশীয় শ্বসনে সহায়তা করা এবং ATP অনু সংশ্লেষ করা।

iii) গলগি বডি - নিউক্লিয়াসের কাছে অবস্থিত একক পর্দাবেষ্টিত চ্যাপ্টা থলির মতো এবং ক্ষুদ্র গহ্বরের মতো অঙ্গাণু।

কাজ- কোশের ক্ষরণকার্যে সাহায্য করে। শুক্রাণুর অ্যাক্রোজোম গঠনে সাহায্য করে।

iv) রাইবোজোম- পর্দাবিহীন, গোলাকার দানার ন্যায় অঙ্গাণু যা নিউক্লিওপ্লাজম, সাইটোপ্লাজম বা এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকার গায়ে বিন্যস্ত থাকে। এটি প্রোটিন ও RNA দ্বারা গঠিত।

কাজ- প্রধানত প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে। তাই একে ‘প্রোটিন ফ্যাক্টরি’ বলে।

v) এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা- সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত নলাকার অঙ্গাণু যা সাইটোপ্লাজমকে অনিয়ন্ত্রিত কিছু প্রকোষ্ঠে বিভক্ত করে। এগুলি একক পর্দাবেষ্টিত। এটি দু-রকমের হয়- দানাদার ও দানাবিহীন।

কাজ- কোশীয় অঙ্গাণু সৃষ্টি করে এবং সাইটোপ্লাজমের বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকে পৃথক রাখে।

vi) লাইসোজোম- সাইটোপ্লাজমে উপস্থিত পর্দাবেষ্টিত, গোলাকার থলির মতো অঙ্গাণু, এর মধ্যে একাধিক উৎসেচক এবং বিভিন্ন রকম কণিকা থাকে।

কাজ- কোশের মধ্যেকার রোগগ্রস্থ অঙ্গাণুগুলি লাইসোজোম নিঃসৃত উৎসেচকের প্রভাবে পাচিত হয়, ফলে কোশের মৃত্যু ঘটে।

vii) কোশগহ্বর বা ভ্যাকুওল - প্রাণীকোশে ভ্যাকুওল ক্ষুদ্রাকার। ভ্যাকুওলের চারপাশে প্রোটোপ্লাজমের যে বিন্যাস থাকে, তাকে প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল বলে।

কাজ- প্রাণীকোশের সংকোচি গহ্বর ও রেচন গহ্বর রেচন পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।

3. প্রোক্যারিওটিক কোশ ও ইউক্যারিওটিক কোশের পার্থক্য লেখ।

বিষয়	প্রোক্যারিওটিক কোশ	ইউক্যারিওটিক কোশ
1) নিউক্লিয়াস	নিউক্লীয় পর্দা দিয়ে ঘেরা আদর্শ নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত।	নিউক্লীয় পর্দা দিয়ে ঘেরা আদর্শ নিউক্লিয়াস উপস্থিত।
2) কোশঅঙ্গাণু	পর্দা দিয়ে ঘেরা কোশ অঙ্গাণু (যেমন- মাইটোকনড্রিয়া, লাইসোজোম,গলগি বডি, ক্লোরোপ্লাস্ট প্রভৃতি) থাকে না।	পর্দা দিয়ে ঘেরা কোশ অঙ্গাণু (যেমন- মাইটোকনড্রিয়া, লাইসোজোম, ক্লোরোপ্লাস্ট, গলগি বডি) উপস্থিত
3) রাইবোজোম	70S প্রকৃতির এবং সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় থাকে।	80S প্রকৃতির এবং এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকার সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে
4) সেন্ট্রোজোম	অনুপস্থিত	উদ্ভিদকোশে অনুপস্থিত কিন্তু প্রাণীকোশে বর্তমান
5) কোশপ্রাচীর	কোশপ্রাচীরের মুখ্য উপাদান হল পেপটাইডোগ্লাইকান বা মিউরন	কোশপ্রাচীরের মুখ্য উপাদান সেলুলোজ। প্রাণীকোশে কোশপ্রাচীর থাকে না।
উদাহরণ-	ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ সবুজ শৈবাল	উন্নত উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশ

4. উদ্ভিদকোশ ও প্রাণীকোশের মধ্যে পার্থক্যগুলি লেখ।

বিষয়	উদ্ভিদকোশ	প্রাণীকোশ
i) কোশ আবরক	কোশআবরকরূপে কোশপ্রাচীর ও কোশপর্দা বর্তমান	কোশ আবরকরূপে কেবলমাত্র কোশপর্দা বর্তমান।
ii) নিউক্লিয়াসের অবস্থান	সাধারণত কোশের পরিধির দিক অবস্থান করে।	কোশের কেন্দ্রে অবস্থান করে
iii) লাইসোজোম	সাধারণত লাইসোজোম থাকে না।	লাইসোজোম থাকে
iv) মাইটোকনড্রিয়ার সংখ্যা	সংখ্যায় কম	সংখ্যায় বেশি
v)সেন্ট্রোজোম	সেন্ট্রোজোম থাকে না (ব্যতিক্রম- নিম্নশ্রেণীর উদ্ভিদকোশ -শৈবাল, ক্ল্যামাইডোমোনাস	সুস্পষ্ট ও সক্রিয় সেন্ট্রোজোম থাকে। (ব্যতিক্রম- স্নায়ুকোশ)

Kosh Class 9 Life Science | কোশ

Ratings