সঠিক উত্তরটি নির্বাচন কর (প্রশ্নমান-1)

1. যে প্রকার শ্বসনে বেশি পরিমানে শক্তির মুক্তি ঘটে-

a. অবাত শ্বসন

b. সবাত শ্বসন

c. শ্বাসকার্য

d. কোনোটিই নয়

2. যে প্রকার শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, তা হল

a. অবাত শ্বসন

b.সবাত শ্বসন

c. কোহল সন্ধান

d. ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান

3. সবাত শ্বসনে এক গ্রাম অণু গ্লুকোজ জারনের ফলে কতটা শক্তি উৎপন্ন হয়?

a. 160 kcal

b. 275 kcal

c. 686 kcal

d. 570 kcal

4. সবাত শ্বসনে ATP উৎপন্ন হয় -

a. 35 অনু

b. 36 অনু

c. 37 অনু

d. 38 অনু

5. সকল প্রকার শ্বসনের সাধারণ পর্যায়টি হল -

a. প্রান্তীয় শ্বসন

b. ক্রেবস চক্র

c. সাইট্রিক অ্যাসিড চক্র

d. গ্লাইকোলাইসিস

6. গ্লাইকোলাইসিসের অপর নাম হল -

a. ক্রেবস চক্র

b. PMP পথ

c. সাইট্রিক অ্যাসিড চক্র

d. EMP পথ

7. গ্লাইকোলাইসিস কোশের যে স্থানে ঘটে, তা হল-

a. সাইটোপ্লাজম

b. রাইবোজোম

c. গলগি বডি

d. মাইটোকনড্রিয়া

8. ক্রেবস চক্র ঘটে মাইটোকনড্রিয়ার -

a. বহিঃপর্দায়

b. ধাত্রে

c. ক্রিষ্টিতে

d. বহিঃপ্রকোষ্ঠে

9. ক্রেবস চক্র অপর যে নামে পরিচিত-

a. EMP পথ

b. ETS চক্র

c. PMP পথ

d. TCA চক্র

10. কোণ ধরনের কোশে অবাত শ্বসন ঘটে-

a. জনন কোশে

b. যকৃৎকোশে

c. নার্ভকোশে

d. পেশিকোশে

11. অবাত শ্বসন ঘটে-

a. সাইটোপ্লাজমে

b. প্লাস্টিড-এ

c. মাইটোকনড্রিয়াতে

d. রাইবোজোম-এ

12. ঐচ্ছিক পেশিকোশে অবাত শ্বসনের ফলে উৎপন্ন হয়-

a. সাইট্রিক অ্যাসিড

b. ল্যাকটিক অ্যাসিড

c. পাইরুভিক অ্যাসিড

d. অক্সালো অ্যাসিটিক অ্যাসিড

13. যে উৎসেচকটি কোহল সন্ধানে সাহায্য করে, তা হল-

a. জাইমেজ

b. লাইপেজ

c. অ্যামাইলেজ

d. ল্যাকটেজ

14. প্রান্তীয় শ্বসন ঘটে যে স্থানে -

a. সাইটোপ্লাজমে

b. মাইটোকনড্রিয়ার অন্তঃপর্দায়

c. মাইটোকনড্রিয়ার ধাত্রে

d. সাইটোপ্লাজম ও মাইটোকনড্রিয়ায়

শুন্যস্থান পূরণ করো। (প্রশ্নমান-1)

1. ক্রেবসচক্রে উৎপাদিত প্রথম কার্বনযুক্ত জৈব যৌগটি হল সাইট্রিক অ্যাসিড।

2. সন্ধান একপ্রকার অবাত শ্বসন।

3. অবাত শ্বসনে গ্লুকোজের অসম্পূর্ন জারণ ঘটে।

4. দুধের সন্ধান ঘটিয়ে দই উৎপন্ন করে ল্যাকটোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া।

5. কোহল সন্ধানে ইস্ট এর কোশে ইথাইল অ্যালকোহল উৎপন্ন হয়।

6. শ্বসন একপ্রকার নিয়ন্ত্রিত দহন।

7. কোশের মুখ্য শ্বসনবস্তু হল গ্লাইকোজেন।

8. বেকারি শিল্পে কোহল সন্ধান প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।

9. শ্বসনের শেষে উৎপন্ন শক্তিধর যৌগ হল ATP .

10. শ্বসনের বিপরীতমুখী প্রক্রিয়াটি হল সালোকসংশ্লেষ।

দু-একটি শব্দে উত্তর দাও। (প্রশ্নমান -1)

1. মুক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় কোণ প্রকার শ্বসনে?

সবাত শ্বসন

2. গ্লাইকোলাইসিসের শেষে কত অনু ATP উৎপন্ন হয়?

2 অণু

3. ক্রেবস চক্রের শেষে এক গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে কত অনু ATP উৎপন্ন হয়?

24 অনু

4. এক গ্রাম অনু গ্লুকোজের জারণে মোট কত অনু ATP উৎপন্ন হয়?

38 অনু

5. TCA চক্রের প্রথম উপজাত বস্তুটির নাম কি?

সাইট্রিক অ্যাসিড

6. ক্রেবস চক্রে চার কার্বনযুক্ত শেষ যৌগটির নাম কি?

অক্সালো অ্যাসেটিক অ্যাসিড

7. শ্বসনের প্রধান উদ্দেশ্য কি?

খাদ্যমধ্যস্থ স্থৈতিকশক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তরিত করা।

8. ETS -এর সম্পূর্ন নাম কি?

ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম

9. কোহল সন্ধানের ফলে উৎপন্ন বস্তুগুলির নাম লেখ।

ইথাইল অ্যালকোহল ও কার্বন ডাই অক্সাইড

10. একটি বহিঃকোশীয় সন্ধানের উদাহরণ দাও।

কোহল সন্ধান

11. অবাক শ্বসনকারী দুটি ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।

ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া ও সালফার ব্যাকটেরিয়া।

12. অবাক শ্বসনকারী একটি এককোশী ও একটি বহুকোশী প্রাণীর উদাহরণ দাও।

এককোশী প্রাণী-মনোসিস্টিস

বহুকোশী প্রাণী- ফিতাকৃমি

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর -(প্রশ্নমান -2)

1. শ্বসনকে ‘নিয়ন্ত্রিত দহন’ বলার কারন কি?

শ্বসন এবং দহনে সংঘটিত প্রক্রিয়াগুলি হল -

i) অক্সিজেনের উপস্থিতিতে যেকোনো জটিল জৈব পদার্থের বিশ্লেষণ ঘটে।

ii) জৈবযৌগ বিশ্লিষ্ট হয়ে H2O ও CO2 উৎপন্ন করে এবং শক্তি নির্গত হয়।

কিন্তু শ্বসন প্রক্রিয়া দহনের মতো অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘটে না। শ্বসন হল উৎসেচক এবং প্রোটোপ্লাজমের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রক্রিয়া। শ্বসনে শক্তির মুক্তি ধীরে ধীরে ও ধাপে ধাপে ঘটে। এইজন্যই শ্বসনকে ‘নিয়ন্ত্রিত দহন’ বলা হয়।

2. সন্ধান বলতে কি বোঝায়?

যে জৈবনিক প্রক্রিয়ায় বায়ুজীবী বা অবায়ুজীবী জীবকোশে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে নির্দিষ্ট উৎসেচকের সাহায্যে শ্বসনবস্তু অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে বিভিন্ন জৈবযৌগ (যেমন- ইথাইল অ্যালকোহল, ল্যাকটিক অ্যাসিড প্রভৃতি) উৎপন্ন করে এবং শ্বসনবস্তু মধ্যস্থ স্থৈতিক শক্তির আংশিক মুক্তি ঘটায়, তাকে সন্ধান বলে।

উৎপন্ন পদার্থের ওপর ভিত্তি করে সন্ধান প্রধানত দু-প্রকার। যথা-

i) কোহল সন্ধান এবং

ii) ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান

3. গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে?

শ্বসনের প্রাথমিক পর্যায়ে যে পদ্ধতিতে কোশস্থ গ্লুকোজ অক্সিজেন ছাড়া, উৎসেচকের সাহায্যে কোশের সাইটোপ্লাজমে ধারাবাহিক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আংশিকভাবে জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড, NADH ও ATP উৎপন্ন করে, তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। এই প্রক্রিয়া কোশের সাইটোপ্লাজমে ঘটে।

বিজ্ঞানী এম্বডেন, মেয়ারহফ ও পারনাস গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ার ধারাবাহিক বিক্রিয়াগুলি আবিষ্কার করেন বলে তাদের নামানুসারে একে EMP-পথ বলা হয়ে থাকে।

4. ক্রেবস চক্রকে সাইট্রিক অ্যাসিড চক্র ও TCA চক্র বলা হয় কেন?

ক্রেবস চক্রে উৎপাদিত প্রথম জৈব অ্যাসিডটি হল সাইট্রিক অ্যাসিড। এই কারণে ক্রেবস চক্রকে সাইট্রিক অ্যাসিড চক্র বলা হয়। এই সাইট্রিক অ্যাসিডে তিনটি কার্বক্সিল গ্ৰুপ বর্তমান থাকে বলে ক্রেবস চক্রকে TCA(Tricarboxylic acid) চক্র বলা হয়।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর (প্রশ্নমান-3)

1. সবাত শ্বসন ও অবাত শ্বসনের সমীকরণসহ সংজ্ঞা দাও।

সবাত শ্বসন- যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় বায়ুজীবী জীবের কোশস্থ শ্বসনবস্তু বা গ্লুকোজ মুক্ত অক্সিজেন ও উৎসেচকের সাহায্যে সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল ও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে এবং শ্বসনবস্তুস্থিত শক্তির মুক্তি ঘটায়, তাকে সবাত শ্বসন বলে।

সমীকরণ:

C6H12O6+6O2→উৎসেচক 6CO2+6H2O +686 kcal

অবাত শ্বসন- যে শ্বসন পদ্ধতিতে জীবকোশে শ্বসনবস্তু(প্রধানত গ্লুকোজ) অক্সিজেনযুক্ত অজৈব যৌগের অক্সিজেনের সাহায্যে অসম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড, জল ও অক্সাইড যৌগ উৎপন্ন করে এবং শ্বসন বস্তু মধ্যস্থ স্থৈতিক শক্তির আংশিক মুক্তি ঘটায়, তাকে অবাত শ্বসন বলে।

সমীকরণ-(ব্যাকটেরিয়া কোশে)

C6H12O6+12NO3→12NO2+6CO2+6H2O+50

2. কোহল সন্ধান বলতে কি বোঝায়? এর দুটি ব্যবহারিক গুরুত্ব লেখ।

যে সন্ধান প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে ইস্ট নিঃসৃত জাইমেজ উৎসেচকের সাহায্যে গ্লুকোজ অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে ইথাইল অ্যালকোহল ও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে এবং খাদ্যমধ্যস্থ শক্তির আংশিক মুক্তি ঘটায় তাকে কোহল সন্ধান বলে।

ব্যবহারিক গুরুত্ব -

i) ইস্ট নামক এককোশী ছত্রাক নিঃসৃত জাইমেজ উৎসেচকের সাহায্যে গ্লুকোজ দ্রবণের সন্ধান ঘটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে অ্যালকোহল উৎপাদন করা হয়।

ii) পাউরুটি, কেক, বিস্কুট প্রভৃতি প্রস্তুতিতে কোহল সন্ধান ব্যবহৃত হয়।

3. শ্বসনের তিনটি তাৎপর্য:

i) শক্তির মুক্তি ও রূপান্তর: শ্বসন প্রক্রিয়ার সাহায্যে খাদ্য মধ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি গতিশক্তিরূপে মুক্ত হয়। এই শক্তির কিছুটা অংশ ATPএর মধ্যে আবদ্ধ হয় এবং এনার্জি কারেন্সিরূপে ব্যবহৃত হয়। উৎপাদিত শক্তি জোনাকি এবং গভীর সমুদ্রের প্রাণীর দেহে (যেমন- ললিগো) জৈব আলোতে রূপান্তরিত হয় এবং আলো বিকীর্ণ করে। ইলেকট্রিক রে মাছের দেহে উৎপাদিত বিদ্যুৎও শ্বসনে উৎপাদিত শক্তির রূপান্তর বিশেষ।

ii) পরিবেশে O2- CO2 ভারসাম্য রক্ষা- শ্বসনে উৎপাদিত CO2পরিবেশে নির্গত হয় এবং উদ্ভিদ কর্তৃক গৃহীত হয়। অন্যদিকে, উদ্ভিদ O2 ত্যাগ করে এবং জীব শ্বাসকার্যের মাধ্যমে তা গ্রহণ করে ও শ্বসন ক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, পরিবেশে O2 -CO2 ভারসাম্য রক্ষায় শ্বসন অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে।

iii) প্রাণীদেহে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ- উষ্ণশোণিত প্রাণীর দেহে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে শ্বসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর (প্রশ্নমান-5)

1. কোশীয় শ্বসন বলতে কি বোঝায়? কোশীয় শ্বসন কয় প্রকার ও কি কি? সবাত শ্বসন প্রক্রিয়াটি আলোচনা কর। (1+1++3)

কোশীয় শ্বসন - নির্দিষ্ট যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় B2 -এর উপস্থিতিতে, নির্দিষ্ট উৎসেচকের নিয়ন্ত্রণাধীনে কোশস্থ খাদ্যবস্তু জারিত হয়ে শক্তি উৎপন্ন করে এবং উপজাত পদার্থরূপে CO2 ও H2O তৈরি হয়, তাকে কোশীয় শ্বসন বলে।

প্রকারভেদ- কোশীয় শ্বসন তিন প্রকার। যথা-

i) সবাত শ্বসন,

ii)অবাত শ্বসন এবং

iii) সন্ধান

সবাত শ্বসন পদ্ধতি- সবাত শ্বসনের সমগ্র প্রক্রিয়াটি চারটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। পর্যায়গুলি নিম্নরূপ-

i) গ্লাইকোলাইসিস-শ্বসনের প্রথম পর্যায়। এটি সাইটোপ্লাজমে নির্দিষ্ট উৎসেচকের উপস্থিতিতে সংঘটিত হয়। এই পর্যায়ে গ্লুকোজ জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড ও ATP উৎপন্ন হয়।

ii) অ্যাসিটাইল COA উৎপাদন- 3 কার্বনযুক্ত পাইরুভিক অ্যাসিড মাইটোকনড্রিয়ায় প্রবেশ করে এবং 2 কার্বনযুক্ত অ্যাসিটাইল COA উৎপন্ন করে। এই প্রকার জারণে CO2 নির্গত হয় বলে, একে পাইরুভিক অ্যাসিডের অক্সিডেটিভ ডিকার্বক্সিলেশন বলে।

iii) ক্রেবস চক্র- মাইটোকনড্রিয়ার ধাত্রে নির্দিষ্ট উৎসেচকের উপস্থিতিতে চক্রাকার পথে অ্যাসিটাইল CO-A সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল,CO2ও শক্তি উৎপন্ন করে। আবিস্কারক বিজ্ঞানী হ্যানস ক্রেবস -এর নামানুসারে একে ‘ক্রেবস চক্র’ বলা হয়।

iv) প্রান্তীয় শ্বসন- গ্লাইকোলাইসিস, পাইরুভিক অ্যাসিডের ডিকার্বক্সিলেশন এবং ক্রেবস চক্রে উৎপাদিত NADH + H+ এবং FADH2 মাইটোকনড্রিয়ার অন্তঃপর্দায় অবস্থিত ইলেকট্রনবাহক দ্বারা বাহিত হওয়ার সময় শক্তি নির্গত করে। এই শক্তি ADP ও Pi-এর রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় এবং ATP উৎপন্ন করে।

Koshiyo Soshon Class 9 Life Science | কোশীয় শ্বসন

Ratings