1. শব্দ কী?

শব্দ হল এক ধরণের শক্তি, যা বস্তুর কম্পনের ফলে সৃষ্টি হয় এবং অনুদৈর্ঘ্য স্থিতিস্থাপক তরঙ্গের আকারে বিস্তার লাভ করে। শব্দ কঠিন, তরল, ও গ্যাসীয় মাধ্যমের মধ্য দিয়ে বিস্তার লাভ করতে পারে এবং এর কম্পাঙ্কের পাল্লা 20Hz-20kHz-এর মধ্যে হলে মানুষের কানে শ্রবণের অনুভূতি সৃষ্টি হয়।

2. শ্রুতিগোচর শব্দ বলতে কি বোঝ?

শব্দের কম্পাঙ্ক 20Hz থেকে 20000Hz-এর মধ্যবর্তী হলে সেই শব্দ মানুষের শ্রবণের অনুভূতি সৃষ্টি করে, একে শ্রুতিগোচর শব্দ বলা হয়।

3. শব্দেতর বা শ্রবণেতর শব্দ ও শব্দোত্তর বা শ্রবণোত্তর শব্দ বলতে কী বোঝ?

যে শব্দের কম্পাঙ্ক 20 Hz-এর কম তাকে শব্দেতর শব্দ বা শ্রবণেতর শব্দ বলা হয়।

যে শব্দের কম্পাঙ্ক 20kHz-এর বেশি তাকে শব্দোত্তর শব্দ বা শ্রবণোত্তর শব্দ

বলা হয়।

4. সূর্যে বিস্ফোরণ হলে তার শব্দ পৃথিবীতে শোনা যায় না কেন?

সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে অধিকাংশ স্থানেই কোনো জড় মাধ্যম নেই, পুরোটাই শূন্যস্থান। যেহেতু শব্দ বিস্তারের জন্য জড় মাধ্যমের প্রয়োজন। তাই সূর্যে কোনো বিস্ফোরণ হলে তার শব্দ পৃথিবীতে শোনা যায় না।

5. পর্যাবৃত্ত গতি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

কোনো বস্তু যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর একই পথ বারবার অতিক্রম করে বা তার গতির পুনরাবৃত্তি হয়। তবে বস্তুটির গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলা হয়।

সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর গতি, ঘড়ির কাঁটার গতি, সরল দোলকের গতি হল পর্যাবৃত্ত গতির উদাহরণ।

6. কম্পনশীল কণার বিস্তার বলতে কি বোঝ?

কম্পনশীল কণার মধ্য অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সরণকে বিস্তার বলে। ধরা যাক, কণাটি AB সরলরেখার মধ্যে কম্পিত হচ্ছে। তাহলে AB পথের মধ্যবিন্দু O থেকে ডানদিকে কণাটির সর্বোচ্চ সরণ হয় OB ও বামদিকে সর্বোচ্চ সরন হয় OA, অবশ্যই OA= OB হবে।

7. কম্পনশীল কনার পর্যায়কাল ও কম্পাঙ্ক কি?

কম্পনশীল কোনো কনা একটি পূর্নদোলন সম্পন্ন করতে যে সময় নেয়, তাকে কনার গতির পর্যায়কাল বলা হয়।

7.2 নং চিত্রে কণাটি A থেকে যাত্রা শুরু করে B তে গিয়ে আবার Aতে ফিরে আসতে যে সময় নেয় তাই হল কণাটির পর্যায়কাল।

কম্পনশীল কোনো কনা এক সেকেন্ডে যতবার পূর্নদোলন সম্পন্ন করে, তাকে কণাটির গতির কম্পাঙ্ক বলা হয়।

8. কম্পনশীল কণার পর্যায়কাল ও কম্পাঙ্কের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করো।

কোনো কম্পনশীল কণার পর্যায়কাল Ts হলে,

Ts সময়ে কনার পূর্নদোলন হয় 1 বার

1s সময়ে কণার পূর্নদোলন হয় 1Tবার

কম্পাঙ্ক, n =1T

9. তরঙ্গ বলতে কি বোঝ? উদাহরণ দাও।

তরঙ্গ হল জড় মাধ্যমের কণাগুলির সমষ্টিগত কম্পনের ফলে সৃষ্ট একধরনের

আন্দোলন যা মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলির কোনো অগ্রগতি হয় না।

পুকুরের স্থির জলে ঢিল ফেললে দেখা যায় জলে একটি আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে। যে বিন্দুতে ঢিলটি ফেলা হল, সেই বিন্দুকে কেন্দ্র করে এই আলোড়ন বৃত্তের আকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অথচ জলে ভাসমান বিভিন্ন বস্তু ঢেউয়ের সঙ্গে শুধুই ওপর নীচে দোল খায়। এগিয়ে যায় না। একেই তরঙ্গ বলে।

10. সংজ্ঞা লেখো- তরঙ্গের বিস্তার ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য।

কোনো জড় মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যখন তরঙ্গ সঞ্চালিত হয়। তখন মাধ্যমের কম্পনশীল কোনো কনার সাম্যাবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সরণকে তরঙ্গের বিস্তার

(a) বলে।

তরঙ্গের সঞ্চালনের সময়, মাধ্যমের কোনো কনা একবার পূর্নকম্পন সম্পন্ন করতে যে সময় নেয়, সেই সময়ে তরঙ্গ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যতটা দূরত্ব অগ্রসর হয়, তাকে তরঙ্গদৈর্ঘ্য () বলা হয়।

11. তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলতে কি বোঝ? তরঙ্গবেগ বলতে কি বোঝ?

তরঙ্গের সঞ্চালনকালে, মাধ্যমের কোনো কনা এক সেকেন্ডে যতবার পূর্নকম্পন সম্পন্ন করে, তাকে কম্পাঙ্ক (n) বলা হয়।

একক সময়ে কোনো তরঙ্গ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যে দূরত্ব অগ্রসর হয়। তাকে তরঙ্গবেগ (v) বলা হয়।

12. শব্দের প্রতিফলনের সূত্রগুলি লেখো।

শব্দের প্রতিফলনের সূত্র-

1) আপতিত শব্দতরঙ্গ, প্রতিফলিত শব্দতরঙ্গ ও আপতন বিন্দুতে প্রতিফলকের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।

2) আপতন কোণ ও প্রতিফলন কোণ সমান।

13. শব্দ নির্বন্ধ কাকে বলে?

কোনো শব্দ শুনলে তার রেশ আমাদের মস্তিষ্কে মোটামুটি 0.1s স্থায়ী থাকে। এই 0.1s সময়কালের মধ্যে একাধিক শব্দ কানে এলে আমরা ঐ শব্দগুলিকে পৃথকভাবে শনাক্ত করতে পারি না। এই সময়কালকে শব্দ নির্বন্ধ বলা হয়।

14. অনুরণন বলতে কী বোঝ?

বড়ো হলঘরে কোনো শব্দ করলে ঐ শব্দ ঘরের দেয়াল, ছাদ বিভিন্ন জায়গায় বারবার প্রতিফলিত হয়ে শ্রোতার কানে পৌঁছায়। যতক্ষন না শব্দের তীব্রতা শ্রুতিবোধ্য থাকে ততক্ষণ এটি চলতে থাকে। ফলে মূল শব্দ থেমে যাওয়ার পরেও ঐ শব্দের রেশ কিছু সময় ধরে বজায় থাকে। একে অনুরণন বলে।

15. SONAR কী?

SONAR-এর পুরো কথাটি হল Sound Navigation And Ranging, সমুদ্রের গভীরে পাহাড়ের অস্তিত্ব কিংবা ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবশেষের হদিস ইত্যাদি জানতে শ্রবণোত্তর শব্দের সাহায্যে SONAR যন্ত্রটি কাজে লাগানো হয়ে থাকে।

16. সুর ও স্বরের মধ্যে পার্থক্য কি?

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বা সুরশলাকা থেকে একটিমাত্র কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দ নির্গত হলে সেই শব্দকে বলা হয় সুর। অন্যভাবে বলা যায় যে, কোনো বাদ্যযন্ত্র থেকে নির্গত ধ্বনিতে বিভিন্ন কম্পাঙ্ক মিশে থাকে। এইসব কম্পাঙ্কের প্রতিটিই হল এক একটি সুর।

সংগীতের ভাষায় কতকগুলি সুরের সমষ্টি হল স্বর। অর্থাৎ, স্বরের মধ্যে একাধিক কম্পাঙ্কের শব্দ মিশে থাকে।

17. সুরযুক্ত ও সুরবর্জিত শব্দ বলতে কি বোঝ?

সুরযুক্ত শব্দ- স্বনকের নিয়মিত ও পর্যাবৃত্ত কম্পনের ফলে উৎপন্ন শব্দ যা আমাদের কানে শ্রুতিমধুর লাগে তাকে সুরযুক্ত শব্দ বলা হয়। গিটার, সেতার, বাঁশি প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের শব্দ, সুরশলাকার শব্দ ইত্যাদি সুরযুক্ত শব্দের উদাহরণ।

সুরবর্জিত শব্দ- স্বণকের অনিয়মিত ও অপর্যাবৃত্ত কম্পনের ফলে উৎপন্ন শব্দ যা আমাদের কানে শ্রুতিকটু লাগে তাকে সুরবর্জিত শব্দ বলা হয়। গাড়ি চলাচলের শব্দ, পটকার আওয়াজ, কোলাহলের শব্দ, ইত্যাদি সুরবর্জিত শব্দের উদাহরণ।

18. সুরযুক্ত শব্দের বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি?

সুরযুক্ত শব্দের বৈশিষ্ট্য হল তিনটি - এগুলি হল- 1) প্রাবল্য, 2) তীক্ষ্ণতা ও 3) গুণ বা জাতি

19. শব্দের প্রাবল্য বলতে কি বোঝ?

আমরা সারাদিনে যে সমস্ত শব্দ শুনি তার কোনোটা জোরালো বা কোনোটা মৃদু। প্রাবল্য শব্দের এমন এক বৈশিষ্ট্য যার দ্বারা শব্দটি কতটা জোরালোভাবে শ্রোতার কানে এসে পৌঁছায় তা বোঝায়। শব্দের প্রাবল্য একটি অনুভূতিমাত্র। এটি পরিমাপযোগ্য নয়। শব্দের প্রাবল্য, তীব্রতা দ্বারা পরিমাপ করা হয়।

20. মূলত কোণ কোণ ভৌত রাশির পরিবর্তনের জন্য শব্দের প্রাবল্য ও তীক্ষ্ণতা পরিবর্তিত হয়?

সুরযুক্ত শব্দের তীব্রতার পরিবর্তনের জন্য কোনো ব্যক্তির কানে শব্দের প্রাবল্যের অনুভূতির হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে থাকে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, শব্দের তীব্রতা বাড়লে এই অনুভূতিও বাড়ে। অপরদিকে সুরযুক্ত শব্দের কম্পাঙ্কের পরিবর্তনের জন্য কোনো ব্যক্তির কানে শব্দের তীক্ষ্ণতার পার্থক্য ধরা পড়ে। সাধারণত স্বণকের কম্পাঙ্ক যত বাড়ে, কোনো ব্যক্তির কানে শব্দ তত তীক্ষ্ণ বলে মনে হয়।

21. শব্দের কম্পাঙ্ক হল কারণ তীক্ষ্ণতা হল তার ফল- ব্যাখ্যা করো।

তীক্ষ্ণতা মূলত কম্পাঙ্কের ওপর নির্ভরশীল। কোনো সুরের কম্পাঙ্ক বেশি হলে, তীক্ষ্ণতাও বেশি হয়। আবার কম্পাঙ্ক কম হলে তীক্ষ্ণতাও কম হয়। তাই বলা হয়, কম্পাঙ্ক হল কারণ তীক্ষ্ণতা হল তার ফল। তবে কম্পাঙ্ক একটি ভৌত রাশি যা পরিমাপযোগ্য, কিন্তু তীক্ষ্ণতা একটি অনুভূতি যা পরিমাপযোগ্য নয়।

22. শব্দের গুণ বা জাতি বলতে কি বোঝো?

বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন, একই তীব্রতা ও তীক্ষ্ণতাবিশিষ্ট শব্দকে যে বৈশিষ্ট্যের দ্বারা পৃথক করা যায়, তাকে সুরযুক্ত শব্দের গুণ বা জাতি বলা হয়। শব্দের এই বৈশিষ্ট্যের জন্য হারমোনিয়াম, বেহালা, সেতার প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র থেকে উৎপন্ন একই তীব্রতা ও তীক্ষ্ণতাবিশিষ্ট স্বরগুলিকে আমরা সহজেই পৃথক করতে পারি এবং বলে দিতে পারি কোনটি কোন যন্ত্র থেকে উৎপন্ন হয়েছে।

23. শব্দের তীক্ষ্ণতা বলতে কি বোঝ?

একজন পুরুষ, একজন নারী ও একজন শিশু একই তীব্রতায় কোনো একটি শব্দ উচ্চারণ করলে তিনটি শব্দ আমাদের কানে তিনরকম অনুভূতির সৃষ্টি করে। পুরুষ অপেক্ষা নারীর কণ্ঠস্বর চড়া লাগে, আবার নারী অপেক্ষা শিশুর কণ্ঠস্বর চড়া মনে হয়। শব্দের এই বৈশিষ্ট্যকে তীক্ষ্ণতা বলে।

সুরযুক্ত শব্দের যে বৈশিষ্ট্যের জন্য একই তীব্রতার চড়ার সুর ও খাদের সুর শ্রোতা পৃথক করতে পারে তাকে তীক্ষ্ণতা বলা হয়।

24. স্বরের গুন বা জাতি কি কি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল?

স্বরের গুণ বা জাতি যে বিষয়গুলির ওপর নির্ভরশীল তা হল-

1) মূলসুরের সঙ্গে যে সমস্ত উপসুর মিশে থাকে তাদের সংখ্যার ওপর

2) উপসুরগুলির কম্পাঙ্কের ওপর এবং

3) উপসুরগুলির আপেক্ষিক তীব্রতার ওপর

25. শব্দের প্রতিফলন ও আলোর প্রতিফলনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

শব্দের প্রতিফলন ও আলোর প্রতিফলনের মধ্যে পার্থক্য-

শব্দের প্রতিফলন	আলোর প্রতিফলন
1) শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় শব্দের প্রতিফলনের জন্য বড়ো প্রতিফলকের প্রয়োজন।	1) আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য শব্দের তুলনায় অনেক কম হওয়ার জন্য ছোটো প্রতিফলকেও আলোর প্রতিফলন হয়।
2)শব্দের প্রতিফলনে প্রতিধ্বনির সৃষ্টি হয়।	2) আলোর নিয়মিত প্রতিফলনে প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়।

26. শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার জন্য উৎস এবং প্রতিফলকের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব নির্নয় করো।

i. ক্ষণস্থায়ী শব্দ- ক্ষণস্থায়ী শব্দের ক্ষেত্রে শব্দ নির্বন্ধ 110 সেকেন্ড, শব্দের উৎস থেকে প্রতিফলকের ন্যূনতম দূরুত্ব, প্রতিধ্বনি শোনার ক্ষেত্রে ধরা যাক D, বায়ুতে শব্দের বেগ 332 m/s,

∴ 2D = 332 110 m

2D = 33.2 m → D = 16.6 m

অর্থাৎ, ক্ষণস্থায়ী শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার ক্ষেত্রে উৎস ও প্রতিফলকের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব 16.6 m হওয়া দরকার।

বোধগম্য শব্দ - বায়ুতে শব্দের বেগ 332 m/s

একমাত্রিক শব্দ → শব্দ নির্বন্ধ 15 s

∴ 2D = 332 15 → 2D = 66.4 → D= 33.2 m

দ্বিমাত্রিক শব্দ → শব্দ নির্বন্ধ 25 s

∴ 2D = 332 25 →D = 66410 →D = 66.4 m

ত্রিমাত্রিক শব্দ → শব্দ নির্বন্ধ 35 s

∴ 2D = 332 35 → D = 99.6 m

অর্থাৎ একমাত্রিক বোধগম্য শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে উৎস ও প্রতিফলকের ন্যূনতম দূরত্ব হওয়া উচিত 33.2m

দ্বিমাত্রিক বোধগম্য শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে উৎস ও প্রতিফলকের ন্যূনতম দূরত্ব হওয়া উচিত 66.4m

ত্রিমাত্রিক বোধগম্য শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে উৎস ও প্রতিফলকের ন্যূনতম দূরত্ব হওয়া উচিত 99.6m

27. প্রতিধ্বনির সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা কিভাবে নির্নয় করা হয়?

জাহাজের তলদেশের দু-প্রান্তে একই গভীরতায় একটা শব্দের উৎস (S) ও একটি হাইড্রোফেন যন্ত্র (H) ঝোলানো থাকে। উৎস থেকে তীব্র ক্ষণস্থায়ী শব্দ উৎপন্ন করলে শব্দ দুটি পথে হাইড্রোফোনে পৌঁছাতে পারে।
i. সরলরৈখিক SH পথে এবং

ii. সমুদ্রের তলদেশে P বিন্দুতে প্রতিফলিত হয়ে SPH পথে, প্রথম শব্দ হল মূলধ্বনি এবং দ্বিতীয়টি হল প্রতিধ্বনি।

ধরা যাক মূলধ্বনির ও প্রতিধ্বনির হাইড্রোফোনে পৌঁছাতে সময় লাগে t1এবং t2

P থেকে SH এর উপর PQ লম্ব টানা হল। জলে শব্দের বেগ V হলে, SH =Vt

∴ SQ = 15 SH = vt12

S থেকে P পর্যন্ত যেতে শব্দের সময় লাগে t22

∴ SP = vt22

সুতরাং PQ= SP2-SQ2 = (vt22)2- (vt12)2

= v2t22-t12

জলতল থেকে উৎসের গভীরতা = no

∴ওই স্থান থেকে সমুদ্রের গভীরতা = no +PQ

= no + v2t22-t12

28. প্রতিধ্বনির সাহায্যে কিভাবে এরোপ্লেনের উচ্চতা নির্নয় করা হয়?

একটি প্লেন ভূসমান্তরালে u বেগে উড়ে যাচ্ছে। এরোপ্লেনটা যখন A অবস্থানে আসে, তখন একটা তীব্র ক্ষণস্থায়ী শব্দ করা হল এবং এরোপ্লেনটা যখন C অবস্থানে পৌঁছাল তখন প্রতিধ্বনি শোনা গেল। B বিন্দুতে শব্দের প্রতিফলন হলে B থেকে AC এর উপর BD লম্ব টানা হল।

প্রতিধ্বনি শোনার সময়কাল =t হলে , AC = ut

∴ AD = AC2 = ut2

আবার A থেকে B তে যেতে শব্দের সময় লাগে =t2

∴ বায়ুতে শব্দের বেগ V হলে, AB = Vt2

∴ ভূপৃষ্ঠ থেকে এরোপ্লেনের উচ্চতা হল

h= BD = AB2-AD2 = (vt2)2- (vu2)2 = t2V2-u2

29. মানুষের কানের বিভিন্ন অংশের কাজ লেখ।

মূলভাগ	উপভাগ	কাজ
বহিঃকর্ণ	কর্ণছত্র	শব্দের আংশিক প্রতিফলন ঘটিয়ে কানে প্রবিষ্ট মূল শব্দের প্রাবল্য কিছুটা বৃদ্ধি করে
	শ্রবণ নালী	শব্দতরঙ্গ সংগ্ৰহ এবং কেন্দ্রীভূত করা হল এর কাজ
	কানের পর্দা	শব্দতরঙ্গ কানের পর্দাকে আঘাত করে, তার ফলে পর্দায় যে কম্পন সৃষ্টি হয় তা কানের ভিতরের অংশে প্রবেশ করে।
মধ্যকর্ণ	টিমপ্যানিক গহ্বর	কানের পর্দায় সৃষ্ট তরঙ্গ এই অংশে বায়ুকে কম্পিত করে ও পরবর্তী অংশের দিকে শব্দতরঙ্গ এগিয়ে চলে।
মধ্যকর্ণ	ইউস্টেচিয়ান নালী	এটি মধ্যকর্ণে বাতাসের চাপ বজায় রাখে।
অন্তঃকর্ণ	ককলিয়া	ককলিয়ার ভেতরের শব্দগ্রাহক যন্ত্র শব্দের স্পন্দন গ্রহণ করে শ্রুতিসংবেদ উৎপাদন করে। আজিরি স্নায়ুর মাধ্যমে এই শ্রুতিসংবেদ মস্তিষ্কে প্রেরিত হয়, আর তার ফলেই আমরা শুনতে পারি
অন্তঃকর্ণ	ডেস্টিবুলার যন্ত্র	এটির কাজ দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা।

30. শব্দদূষণ কি?

পরিবেশে অবাঞ্চিত ও কানের সহনক্ষমতা বহির্ভুত উচ্চ প্রাবল্য ও তীক্ষ্ণতাবিশিষ্ট অস্বস্থিকর শব্দ যে ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে তাকে শব্দদূষণ বলে।

শব্দের তীব্রতা লেভেলের একক হল বেল (B)

এছাড়া ডেসিবেল (dB) এককেও মাপা হয় শব্দের তীব্রতাকে WHO এর নির্দেশক শব্দের নিরাপদ তীব্রতা স্তর হল 45dB.

65 dB এর উপর তীব্রতা যুক্ত শব্দ শব্দদূষণ ঘটায়।

অনুভূতি সীমার তীব্রতার স্তর হল 120 dB.

Sobdo Class 9 Physical Science | শব্দ

Ratings