crown
Premium

বহুরূপী || সুবোধ ঘোষ -সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

Language : Bengali

1. ‘বহুরূপী’ গল্পটির উৎস লেখ। 

⇒সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ -এর ‘গল্প সমগ্র’-এর তৃতীয় খন্ডের অন্তর্গত পাঠ্য গল্পটি। 

2. জগদীশ বাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর পরিচয় দাও। 

⇒ তার বাড়িতে 7 দিন ধরে থাকা সন্ন্যাসী খুব উঁচু দরের, হিমালয়ের গুহাতে থাকেন, বছরে 1টি মাত্র হরীতকী খান, বয়স হাজার বছরেরও বেশি। 

3. ‘সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস’ - দুর্লভ জিনিসটি কী ?

⇒ সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো। 

4. ‘সেই ফাঁকে জগদীশবাবু পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন’- কীভাবে ?

⇒ আগত সন্ন্যাসীকে সোনার বোল লাগানো কাঠের খরম এগিয়ে দিলে এবং সেটি পরার সময় জগদীশবাবু তার পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। 

5. ‘আমাদের চারজনের সকাল-সন্ধ্যা আড্ডার ঘর’- 4 জন কে কে ?

⇒ হরিদা, ভবতোষ, অনাদি এবং কথক। 

6. ‘এক ঘেষে কাজ করতে ভয়ানক আপত্তি’ - কেন ?

⇒ ঘড়ির কাঁটা ধরে নিয়মমতো একই কাজ করায় কোনো বৈচিত্র্য না থাকায় তার আপত্তি রয়েছে। 

7. ‘সেটাই যে হরিদার জীবনের পেশা’ - পেশাটি কী ?

⇒ বিভিন্ন সময় বহুরূপীর বিভিন্ন বেশ ধারণ করে আনন্দ দান করায় তার জীবনের পেশা। 

8. ‘একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল’ - কোথায়, কেন ?

⇒ চকের বাসস্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে থাকা হরিদাকে দেখে আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল। 

9. ‘তারা দুই চোখ বড়ো করে তাকিয়ে থাকে’ -কারা, কেন ?

⇒ রূপসী বাইজির ছদ্মবেশে হরিদাকে দেখে শহরের নতুন আসা ব্যক্তিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। 

10. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার কত উপার্জন হয়েছে ?

⇒ আট টাকা দশ আনা। 

11. হরিদার কোন কোন রূপের কথা আলোচিত হয়েছে ?

⇒ পাগল, রুপসি বাইজি, বাউল, কাপালি, কাবুলিওয়ালা, হ্যাট-কোট পোটলুন ফিরিঙ্গি সাহেব, পুলিশ, বিরাগি ছদ্মবেশের কথা আলোচিত হয়েছে। 

12. ‘সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস’- বক্তা কে কাকে কেন দুর্লভ বলা হয়েছে ?

⇒ সুবোধ ঘোষের গল্প তৃতীয় খন্ডের অন্তর্গত বহুরূপি সন্ন্যাসীর প্রসঙ্গে হরিদা একথা বলেছেন। 

এখানে দুর্লভ বলতে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলোকে বোঝানো হয়েছে। যে সন্ন্যাসী 7 দিন যাবৎ জগদীশবাবুর বাড়িতে এসেছেন। উঁচু দরের সন্ন্যাসী হওয়ায় তিনি থাকেন হিমালয়ে, খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করেন বছরে মাত্র 1টি হরীতকী। হাজার বছরেরও বেশি বয়সের অধিকারী এরকম সন্ন্যাসী বিরল, দুর্লভ, সাধারণের সান্নিধ্যে আসে না। গ্রামের অবস্থাপন্ন জমিদার জগদীশবাবুর বাড়িতে এই অসাধারণ মানুষটি পদার্পণ করেছেন। ধনী ব্যক্তি হওয়ায় জগদীশবাবুকে তার পায়ের ধুলো, আশীর্বাদ দিয়েছেন। অন্যদিকে হরিদা সাধারণ এবং দরিদ্র মানুষ হওয়ায় ওই অসাধারণ ব্যক্তি তাকে পায়ের ধুলো, আশীর্বাদ দেবেন না বলে কথকের মনে হয়েছে। 

13. ‘হরিদার জীবনে সত্যিই একটি নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে’-বক্তা কে ? হরিদার পরিচয়সহ নাটকীয় বৈচিত্র্যতা ব্যাখ্যা কর। 

⇒ সুবোধ ঘোষের বহুরূপী গল্পের প্রধান ও কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা। তাকে কেন্দ্র করে বিশেষ এক বক্তব্য গল্পকার আমাদের শুনিয়েছেন। 

হরিদা খুব গরীব হলেও ইচ্ছা করলে কোনো অফিসের কাজ কিংবা বিক্রিওয়ালার কাজ সহজেই পেতেন। কিন্তু ঘড়ি ধরে কাজ বা সময় মেপে কাজ করতে তিনি অনিচ্ছুক। এজন্যই বাধা ধরা কাজ ছেড়ে তিনি চা তৈরি করার বা বহুরূপীর মতো ইচ্ছা মাফিক কাজকেই বেছে নিয়েছেন। 

ইচ্ছা মাফিক বহুরূপীর এই কাজে তিনি তৃপ্তি বোধ করেন। একদিন চকের বাসস্ট্যান্ডে হরিদার পাগলের রূপ ধারণ করেন। তাতে মুখ থেকে লালা ঝরে, কটকটে লাল চোখ, কোমরে ছেঁড়া কম্বল, গলায় টিনের কৌটোর মালা এবং হাতে ইঁট তুলে যাত্রীদের দিকে তেড়ে যান। যাত্রীরা কেউ চিনতে না পারলেও ড্রাইভার কাশীনাথ তাকে চিনতে পারে। সেখান থেকে তাকে সরে যেতে বলে। এইরকম একাধিক রূপে তিনি দর্শককে আনন্দ দান করেছে। তাদের সাধ্য মতো বখশিস গ্রহণ করেছেন। কখনও সেজেছেন বাইজি, কাপালি, বাউল, কাবুলিওয়ালা, পুলিশ বা বিরাগীর নিখুঁত ছদ্মবেশ। তার অভিনয়ে দর্শকচিত্ত আনন্দ লাভ করেছে। এতে তার সংসার, জীবন স্বচ্ছল না হলেও ন্যূনতম উপার্জনেই তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন। কারণ এক ঘেয়েমি কাজে বা চাকুরিতে উপার্জন যথাযথ হলেও মানসিক সন্তুষ্টি, স্বাধীনতা সবসময় পাওয়া যায় না। তাই বৈচিত্র্যহীন জীবন -জীবিকা ছেড়ে তিনি এই বৈচিত্র্যপূর্ণ স্বাধীনতার নাটকীয় জীবনকেই বেছে নিয়েছে। 

14. ‘আমাদের সন্দেহ মিথ্যে নয়’ -কাদের, কোন সন্দেহ ? 

⇒ অনাদি, ভবতোষ ও কথকের সন্দেহ। 

সন্ন্যাসীর গল্পটি শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গেলে তারা মনে করে হরিদা নিশ্চয় এবার কিছু করবে। সন্ন্যাসীর ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু করাকে সন্দেহ বলা হয়েছে। 

15. ‘মোটা মতন কিছু আদায় করে নেব’ - বক্তা কে ? কী বুঝিয়েছেন ?

⇒ বক্তা হরিদা। 

মোটা মতন বলতে বেশি পরিমাণ টাকা আদায় করার কথা বলেছেন। 

16. ‘মারি তো হাতি লুন্ঠিত ভান্ডার’ - ব্যাখ্যা লেখ। 

⇒ হরিদা তার ছদ্মবেশের মাধ্যমে অল্প পরিমাণ টাকার পরিবর্তে এমন কিছু করবেন যাতে অধিক পরিমানে টাকা আদায় করতে পারে। যাতে তার সারা বছরটা চলে যাবে। 

17. কথকের মতে জগদীশবাবু হরিদাকে কত বকশিস দিতে পারে ?

⇒ পাঁচ আনার বেশি নয়। 

18. চমৎকার আজকের এই সন্ধ্যার চেহারা -সন্ধ্যার বর্ণনা দাও। 

⇒ জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ ও শান্ত উজ্জ্বলতায় চারদিক সুন্দর হয়ে উঠেছে, ফুরফুরে বাতাস বইছে, গাছের পাতা ঝিরঝিরে শব্দে কিছু বলতে চাইছে। 

19. জগদীশবাবু কোথায় বসেছিলেন তার বর্ণনা দাও। 

⇒ জগদীশবাবু চেয়ারের উপর বসেছিলেন। 

তার সাদা মাথা, সাদা দাড়ি, সৌম্য শান্ত, জ্ঞানী মানুষ-এর আচরণ। 

20. ‘চমকে উঠলেন জগদীশবাবু’-কেন ?

⇒ বিরাগীরূপী হরিদার ছদ্মবেশে চমকে উঠলেন। 

তার হাতে কমন্ডুলু , চিমটে নয়, মৃগচর্মের আসনও নেয়, গৌরিক সাজও নেয়। পরিবর্তে রয়েছে আদুড় গা, ওপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয়, পরনে ছোট বহরের সাদা থান। মাথায় ফুরফুরে করছে শুকনো সাদা চুল, ধুলো মাখা পা, হাতে একটা ঝোলা, ঝোলার ভিতরে গীতা। 

21. ‘বহুরূপী’ গল্প অবলম্বনে হরিদার চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা কর। 

⇒ সুবোধ ঘোষ রচিত বহুরূপী গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে হরিদার নিম্নলিখিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি আমরা লক্ষ্য করি -

i. সরলতা - হরিদা দরিদ্র হলেও জটিল বা লোভী নয়। তার সাধারণ জীবন -যাপন পদ্ধতি ও ন্যূনতম চাহিদা তার জীবনের সরলতাকে প্রকাশ করে। তার নিখুঁত ছদ্মবেশ ও অভিনয়ে দর্শক মুগ্ধ হলেও কখনও কাউকে প্রতারিত করেননি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থগ্রহণ করেনি। 

ii. সততা - হরিদা যোগ্য বহুরূপী হওয়ায় বহুরূপীর সত্ত্বাকে উপলব্ধি করেছে। দারিদ্রেও জীবন কাটালেও বহুরূপীর বৃত্তিকে সততার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। জীবনের গভীর দিককে উপলব্ধি করেছেন, একঘেয়েমি বৃত্তি ছেড়ে নাটকীয় বৈচিত্রতাকে গ্রহণ করেছেন। 

iii. নিখুঁত অভিনেতা : বৃত্তিকে ভালোবাসায় তিনি অর্থকে, অর্থের লোভকে ত্যাগ করেছেন। এই নির্লোভ মানসিকতা তাকে নিখুঁত অভিনয়ে সাহায্য করেছে। তার অভিনয়ের বিভিন্ন রূপে দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছে, প্রশংসা করেছে। তার পরিচিত বন্ধুরাও এই জন্যই বিরাগী -হরিদাকে চিহ্নিত করতে পারেননি। 

iv. দারিদ্র : হরিদা তার বহুরূপীর সত্ত্বাকে ভালোবাসায় সহজেই দারিদ্রকে ভালোবেসেছেন। মাঝে মধ্যে ভাতের হাড়ি চাপালেও কখনও কখনও চাল ছাড়াই শুধুমাত্র জল ফুটেছে। দারিদ্রকে ভালো না বাসলে এই অভাবকে তিনি কখনই মেনে নিতে পারতেন না। 

v. শিল্পীসত্ত্বা : হরিদা চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্যটি হল তার শিল্পীসত্ত্বা। অভিনয়ের এই শিল্পকে ভালোবাসেন বলেই নির্দিষ্ট বেশে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শিল্পী সত্ত্বাই দেখা দিয়েছে। অভাবী হলেও জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকা সহজেই ফিরিয়ে দিয়েছেন, কারণ বিরাগী সত্ত্বা কখনই অর্থকেন্দ্রিক হয় না। আবার বাইজি বা পাগলের ছদ্মবেশে অভিনয় করে প্রাপ্ত অর্থকে সহজেই গ্ৰহণ করেছেন। এই মৌলিক চিন্তাধারাই তার শৈল্পিক মনকে, চিত্তকে প্রকাশ করে। 

এইভাবেই সুবোধ ঘোষের কলমে হরিদা একটি মৌলিক বিচিত্র ও কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে গল্পটিকে সার্থক করে তুলতে সাহায্য করেছে। 

 

22. ‘কী অদ্ভূত কথা বললেন হরিদা’ - কথাটি কী ?

⇒ বিরাগীর, সন্ন্যাসীর হয়ে টাকা স্পর্শ করলে তার ঢং বা তার শিল্পীসত্ত্বা নষ্ট হয়ে যাবে। 

23. ‘অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না’-অদৃষ্ট কী ? কোন ভুল ?

⇒ অদৃষ্ট কথাটির অর্থ ভাগ্য বা ভবিষ্যৎ। 

দরিদ্র হয়েও বিরাগীবেশী হরিদা জগদীশবাবুর দেওয়া টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। দরিদ্র হয়েও টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার এই ঘটনাকেই ভুল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

24. ‘ওসব হল সুন্দর সুন্দর এক একটি বঞ্চনা’ - ওসব কী ? এগুলিকে বঞ্চনা বলা হয়েছে কেন ?

⇒ ওসব বলতে ধন, যন ও যৌবনকে বোঝানো হয়েছে। 

এগুলি মানুষের কাছে কিছু সময়ের জন্য উপস্থিত হলেও চিরকালীন ভাবে থাকে না। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের পর আমাদের সাথে বঞ্চনা করায় সাধারণ দৃষ্টিতে আমাদের প্রিয় এই বিষয়গুলিকে সুন্দর সুন্দর বঞ্চনা বলা হয়েছে 

25. ‘সেটা পূর্ব জন্মের কথা’ - কথাটি কী ?

⇒ কথাটি হল হরিদা বিরাগী হওয়ায় বর্তমানে তার রাগ নামক কোনো রিপু নেই। যা পূর্ব জন্মে ছিল। 

26. ‘কিছু উপদেশ শুনিয়ে যান বিরাগীজি’ - বিরাগী কী শুনিয়েছিলেন ?

⇒ উপদেশটি হল - ধন, যন, যৌবন এগুলি এক একটি সুন্দর সুন্দর প্রবঞ্চনা। 

To get the premium content

Ratings
No reviews yet, be the first one to review the product.
Click to send whatsapp message
Copywrite 2025 LRNR