Chapter 8 উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত Notes

Language : Bengali

The Note contains Textual Question Answers from WBBSE Class 10 History Chapter 8 Uttor Ouponibeshik Bharot (অষ্টম অধ্যায় উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত). Read the Question Answers carefully. This Question Answer set from the WBBSE board provides quality Multiple Choice Questions (MCQ), Short Answer Type Questions (SAQ), and Long Answer Type Questions from the above chapter. By reading these, students will get a clear idea about that chapter. It will enhance their knowledge and enable them to get good marks in the board exams. 

দশম শ্রেণি ইতিহাস অষ্টম অধ্যায় উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত,

উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত অধ্যায় এর সম্পূর্ণ আলোচনা ও অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর,

উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত থেকে সংক্ষিপ্ত, রচনাধর্মী ও ব্যাখ্যা ধর্মী প্রশ্নোত্তর, 

Class 10 History Chapter 8 Uttor Ouponibeshik Bharot,

Uttor Ouponibeshik Bharot Class 10 History,

Short Answer Type Question (SAQ) from Uttor Ouponibeshik Bharot,

Long Answer Type Question from Uttor Ouponibeshik Bharot,


Chapter-8 উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত Notes [Sanjay sir Notes]


1. ভারতের স্বাধীনতা আইন কবে পাশ হয়?

৪ঠা জুলাই [1947]


2. ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় কে ছিলেন?

লর্ড মাউন্টব্যাটেন 


3. স্বাধীন ভারতের শেষ গভর্ণর জেনারেল কে?

চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী 


4. স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?

ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ 


5. দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো?

স্বাধীনতা লাভের প্রাককালে বেশ কিছু অঞ্চল ছিল যেগুলি ব্রিটিশ সরকারের সার্বভৌমত্বের অধীনে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় স্বশাসনের অধিকার ভোগ করত এই অঞ্চলগুলি দেশীয় রাজ্য নামে পরিচিত। 


6. ভারতের বিসমার্ক কাকে বলে?

বল্লভভাই প্যাটেল 


7. LOC- এর পুরো নাম কী?

লাইন অব কনট্রোল। 


8. পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন?

প্রফুল্ল ঘোষ 


9. ‘ছেড়ে আসা গ্রাম’ কার আত্মজীবনী?

দক্ষিণারঞ্জন বসু 


10. 71 এর ডায়েরি কার লেখা?

সুফিয়া কামাল 


11. কাকে উদবাস্তুদের বন্ধু বলা হয়?

শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী 


12. ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন কবে গঠিত হয়?

1948 খ্রী:, জওহরলাল নেহেরু 


13. J.V.P কমিটি কাদের নিয়ে গঠিত হয়?

জওহরলাল নেহেরু, বল্লভ ভাই প্যাটেল, ও পট্টভি সীতারামাইয়া 


14. রাজ্য পুনর্গঠন আইন কবে পাশ হয়, কেন?

1956 খ্রী:, ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে। 


15. PEPSU-এর পুরো নাম কী?

Patiala and Eastern Punjab States Union.


16. কার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়?

1946 খ্রী:, জওহরলাল নেহেরু


17. কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দলের নাম কী?

ন্যাশনাল কনফারেন্স 


18. ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্র সচীব কে ছিলেন?

V.P. মেনন 


19. ভারতীয় ইউনিয়নে কতগুলি দেশীয় রাজ্য যোগ দিয়েছিল?

550 টি 


20. স্বাধীনতার প্রাক্কালে ভারতের সবচেয়ে বড়ো দেশীয় রাজ্যটি কী?

হায়দ্রাবাদ 


21. গোয়া ভারতভুক্ত হয় কবে?

1961 খ্রী:


22. “ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম” -কে রচনা করেন?

মৌলানা আবুল কালাম আজাদ 


23. “পাকিস্তান অব দ্যা পার্টিশান অব ইন্ডিয়া” - গ্রন্থের লেখক কে?

আম্বেদকর 


24. “উদবাস্তু”- গ্রন্থের রচয়িতা কে?

হিরণ্ময় বন্দোপাধ্যায় 


25. “ট্রেন টু পাকিস্তান”- কার লেখা?

খুশবন্ত সিং 


26. “মিডনাইট চিলড্রেন”- গ্রন্থটি কার?

সলমন রুশদি 


27. “দ্যা মার্জিনাল ম্যান”- গ্রন্থটি কার?

প্রফুল্ল চক্রবর্তী 


28. “স্বাধীনতার স্বাদ”- গ্রন্থটির রচয়িতা?

মাণিক বন্দোপাধ্যায় 


29. “আগুনপাখি”- উপন্যাস কার?

হাসান আজিজুল হক 


30. “সুপড়ি বনের সারি” -কার লেখা?

শঙ্খ ঘোষ। 


31. “মেঘে ঢাকা তারা”- চলচিত্রটি কার?

ঋত্বিক ঘটক 


32. পুরুলিয়া জেলাটি পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয় কবে?

1956 খ্রী:


33. পুরুলিয়া জেলার অপর নাম কী?

জঙ্গল মহল 


34. ভাষাভিত্তিক গুজরাট রাজ্যটি গঠিত হয় কবে?

1960 খ্রী:


35. পুনর্গঠিত কেরালা রাজ্যটি কোথায় অবস্থিত ছিল?

মালাবার উপকূলে 


36. সরকারি ভাষা কমিশন গঠিত হয় কবে?

1955 খ্রী:


37. ‘এপার গঙ্গা ওপার গঙ্গা’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?

জ্যোতির্ময়ী দেবী 


38. “নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে”-গ্রন্থের রচয়িতা কে?

অতীন বন্দোপাধ্যায় 


39. “সেদিনের কথা”- গ্রন্থটি কার?

মনী কুন্তলা সেন 


40. সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় কত সালে?

1975 সালে 


Marks-2 Question-Answers:

1. 1950 সালের 26 শে জানুয়ারী গুরুত্বপূর্ণ কেন?

i) এই দিন ভারতের নিজস্ব সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। 

ii) দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে 26 শে জানুয়ারী দিনটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে। 


2. দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো?

1947 সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় 48 শতাংশের মতো অংশে স্বায়ত্ত শাসিত রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। ইংরেজদের প্রত্যক্ষ শাসনের বাইরে দেশীয় রাজারাই এগুলি শাসন করতেন। ছোটো বড়ো মিশিয়ে প্রায় 601টি দেশীয় রাজ্য ছিল। 


3. উদবাস্তু কাদের বলা হয়?

বহু প্রজন্ম ধরে কোনো ভূখণ্ডে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী বা তার অংশ প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যুদ্ধবিগ্রহ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় কারণে বাধ্যতামূলকভাবে দেশত্যাগ করে ছিন্নমূল হয় এবং অন্যত্র গিয়ে নতুন বাসভূমি গড়ে তোলে তখন তাদের উদ্বাস্তু বলে। 


4. কোন সময়কে কেন পুনর্বাসনের যুগ বলা হয়?

1947-52 খ্রী: পর্যন্ত সময়কালকে পুনর্বাসনের যুগ বলা হয়। ভারত বিভাজনের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর লক্ষ লক্ষ অমুসলমান পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ববঙ্গ থেকে ভারতবর্ষে এসে আশ্রয় নেয়। এর ফলে ভারতে আর্থিক ও সামাজিক সংকটের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এই সংকট সমাধানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। 


5. মাউন্ট ব্যাটেন প্রস্তাব কী?

ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন 1947 সালের 3 রা জুন ভারতবিভাগের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এটি মাউন্ট ব্যাটেন প্রস্তাব নামে পরিচিত। 

এই পরিকল্পনায় বলা হয়-

i) সমগ্র ভারতকে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক ডোমিনিয়নে বিভক্ত করা হবে 

ii) মুসলিম প্রধান প্রদেশ যথা- সিন্ধু, বেলুচিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পূর্ব বাংলা, পশ্চিম পাঞ্জাবকে নিয়ে গঠিত হবে পাকিস্তান রাষ্ট্র। 

iii) অবশিষ্ট ভারত পশ্চিম বাংলা ও পূর্ব পাঞ্জাব নিয়ে গঠিত হবে ভারত রাষ্ট্র। 

iv) বাংলা ও পাঞ্জাবকে বিভক্ত করার জন্য একটি সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠিত হবে। 


1. 1947 খ্রী: দেশভাগ ভারতে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেছিল?

ভারতের স্বাধীনতা আইন অনুসারে 1947 সালের 15 ই আগস্ট ভারত বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। নবগঠিত ভারত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সম্মুখীন হয়। 

দেশত্যাগ- দেশভাগের পর মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে পৃথক পাকিস্তানের সৃষ্টি হলে সেখানে হিন্দু, শিখ প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবন, ধর্ম, সম্পত্তি নিরাপত্তা হীনতার সম্মুখীন হয়। ফলে পাকিস্তানের লক্ষ লক্ষ হিন্দু ও শিখ দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে আসে। 

উদবাস্তু সমস্যা- পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু ও শিখ উদবাস্তু হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের অন্ন, বস্ত্র, ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা ভারত সরকারের সামনে কঠিন সমস্যা হিসাবে দেখা দেয়, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে উদবাস্তু সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। 

সম্পদ হ্রাস- দেশভাগের ফলে ভারতের অর্থসম্পদ, সামরিক শক্তি, প্রভৃতির একটি বড়ো অংশ পাকিস্তানে চলে যায় ফলে ভারতের অর্থ ও সম্পদ যথেষ্ট হ্রাস পেয়ে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। 

কৃষি উৎপাদন ব্যাহত - দেশভাগের ফলে ভারতের বিপুল পরিমান কৃষিজমি পাকিস্তানের ভাগে পড়ে যায়। ফলে স্বাধীনতার পর ভারতের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। এবং দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। 

শিল্পের কাঁচামালের অভাব- ভারতের পাট, তুলো প্রভৃতি কাঁচামাল উৎপাদক অঞ্চলের একটি বড়ো অংশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলে ভারতের শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাব দেখা যায় ফলে শিল্প উৎপাদন যথেষ্ট ব্যাহত হয়। 


2. স্বাধীনতার পর ভাষার ভিত্তিতে কীভাবে রাজ্য পুনর্গঠিত হয়েছিল?

মানুষের মুখের ভাষা মানব সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মাতৃভাষার মাধ্যমেই মানুষ একে অন্যের সাথে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে অথচ ভারতের স্বাধীনতা লাভের পরবর্তীকালে রাজ্য পুনর্গঠনের ক্ষেত্রের প্রথমদিকে ভাষাগত বিষয়টিকে জাতীয় নেতৃবৃন্দরা বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি। 

i) দাবী- স্বাধীন ভারতে অধিকাংশ দেশবাসীর দাবী ছিল ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন করতে হবে কিন্তু 1948 খ্রী: গণপরিষদের উদ্দেশ্যে গঠিত ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন 1949 খ্রি: তার রিপোর্ট জমা দেয় কিন্তু 1949 খ্রী: কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গঠিত J.V.P কমিটি এই দাবী প্রত্যাখ্যান করেন। 

ii) আন্দোলন- কিছু দিনের মধ্যেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যপুনর্গঠনের দাবীতে আন্দোলন শুরু করেন। মাদ্রাজ প্রদেশের তেলেগু ভাষাবাসী অঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি জানিয়ে শ্রী রামালু অনশনে প্রাণ ত্যাগ করতে সেখানে চরম নৈরাজ্য শুরু হয় ফলে কেন্দ্র সরকার বাধ্য হয়ে তেলেগু ভাষাবাসী অঞ্চল নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিল ভাষাবাসী অঞ্চল নিয়ে তামিলনাড়ু গঠিত হয়। 

iii) রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন - এই পরিস্থিতিতে অঙ্গরাজ্যগুলির সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করে। 

iv) রাজ্য পুনর্গঠন আইন - রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে 1956 খ্রী: রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাশ হয়। এর দ্বারা 1956 খ্রী: 1 লা নভেম্বর ভারত সরকার ভাষার ভিত্তিতে 14 টি রাজ্য ও প্রশাসনিক সুবিধার জন্য 6 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করে। এভাবে ভারতে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। 


3. হায়দ্রাবাদ সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা কর। 

নিজাম শাসিত হায়দ্রাবাদ ছিল স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতের বৃহত্তম রাজ্য। 1947 খ্রী: ভারতবর্ষে স্বাধীনতার সময়ে হায়দ্রাবাদের নিজাম ছিলেন উষ্মান আলি খান। হায়দ্রাবাদের নিজামরা তীব্র ভারত বিদ্বেষী ছিলেন। নিজাম ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে ইচ্ছুক ছিলেন না। হায়দ্রাবাদের অস্তিত্ব একটি স্বাধীন দেশ হিসাবেই হোক, এই ছিল নিজামের ইচ্ছা। হায়দ্রাবাদের শাসক মুসলিম হলেও প্রায় ৮৭ শতাংশ বাসিন্দা ছিল হিন্দু। সাম্প্রদায়িক নেতা কাশিম রিজভির নেতৃত্বে রাজাকার নামে হায়দ্রাবাদের দাঙ্গা বাহিনী সীমান্তবর্তী ভারতীয় ভূ-খন্ডের হিন্দুদের ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নেয়। 

হায়দ্রাবাদের নিজাম সেখানকার মুসলিমদের ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার আহ্বান জানান। হায়দ্রাবাদ পাকিস্তান থেকে অস্ত্র-শস্ত্র এনে এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। 

এইরকম জটিল পরিস্থিতিতে ভারত হায়দ্রাবাদকে একটি চরমপত্র পাঠালে নিজাম তা উপেক্ষা করে এই পরিস্থিতিতে জেনারেল জয়ন্তনাথ চৌধুরির নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী হায়দ্রাবাদে অভিযান শুরু করে যা অপারেশন পোলো নামে পরিচিত। (১৯৪৮ খ্রী:)

ভারতীয় আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়ে হায়দ্রাবাদের বাহিনী শীঘ্রই পরাজিত হয় এবং আত্মসমর্পন করে। যার ফলে হায়দ্রাবাদ ভারতের দখলে আসে। হায়দ্রাবাদের নিজাম ‘ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করলে হায়দ্রাবাদ ১৯৫০ খ্রী: ২৬শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। 


4. জুনাগড় রাজ্যটি কীভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়?

ভারতের সৌরাষ্ট্র উপকূলে একটি ছোটো দেশীয় রাজ্য ছিল জুনাগড়। এর ৮০ শতাংশ জনগণ হিন্দু হলেও রাজ্যের শাসক ছিলেন মুসলমান। এর সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজা ভারতে যোগদান করতে চাইলেও মুসলমান শাসক যোগ দিতে চাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে দাড়ায়। 

i) প্রজা বিদ্রোহ- দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের সমস্ত দেশীয় রাজ্য ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভারত রাষ্ট্রে যোগ দিলেও জুনাগড় ছিল ব্যতিক্রম। জুনাগড়ের দেওয়ান শাহনাওয়াজ ভুট্ট ছিলেন মুসলিম লিগের উগ্র সমর্থক। তারই প্ররোচনায় নবাব 1947 সালের 15 ই আগস্ট পাকিস্তানে যোগদানের সদ্ধান্ত ঘোষণা করলে জুনাগড়ের অমুসলমান প্রজারা ব্যাপকভাবে গণবিক্ষোভ শুরু করে। 

ii) ভারতীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত - জুনাগড়ের প্রজাদের আবেদনের ভিত্তিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। স্থির হয় গণভোটের মাধ্যমেই জুনাগড় সমস্যার সমাধান হবে এমতাবস্তায় 1947 সালের 15 ই আগস্ট জুনাগড়ের নবাব তৃতীয় মহম্মদ মহাতাব পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে ভারত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। 

iii) সেনা অভিযান- সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী জুনাগড়ে প্রবেশ করে। পাশাপাশি প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে পড়ে জুনাগড়ের নবাব পাকিস্তানের সাহায্য প্রাথর্না করেন। তবে আন্তর্জাতিক কারণে পাকিস্তানের পক্ষে সাহায্য পাঠানো সম্ভব হয়নি। নিরুপায় হয়ে নবাব স্বপরিবারে পাকিস্থানে চলে যায়। শাহনওয়াজ ভুট্টো দুর্বল সামরিক শক্তি নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তিনিও পাকিস্তানে পালিয়ে যান। ফলে দেশীয় রাজ্য জুনাগড়ের পরাজয় ঘটে। 

iv) গণভোট গ্রহণ- 1948 খ্রী: 20ই ফেব্রুয়ারি জুনাগড়ের গণভোট গ্রহণ করা হয়। গণভোটে সেখানকার মানুষ ভারতের পক্ষে যোগ দেয়। এরই ফলশ্রুতিতে 1949 খ্রী: জানুয়ারী মাসে জুনাগড় ভারতভুক্ত হয়। 


5. কাশ্মীর সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা কর। 

ভারতের স্বাধীনতার সময় ভারতে প্রায় 601 টি দেশীয় রাজ্য ছিল। এবং এগুলির বেশিরভাগ ভারতের সঙ্গে যোগদান করলেও কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ, জুনাগড় রাজ্য যোগদান করেনি। এই তিনটি রাজ্যের ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জটিল সমস্যা ছিল কাশ্মীর সমস্যা। 

কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং হিন্দু হলেও বেশিরভাগ প্রজারা ছিল মুসলিম। হরি সিং প্রথমদিকে চেয়েছিলেন ভারত বা পাকিস্তান কোনো রাষ্ট্রেই যোগ না দিয়ে তার স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখতে। 

কাশ্মীর রাজ্যটি রাজনৈতিক, ভৌগোলিক, এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল বলে মহম্মদ আলি জিন্না কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়েছিলেন। 

শেখ আবদুল্লার সভাপতিত্বে কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স কাশ্মীরকে ভারতভুক্তির পক্ষে প্রবল জনমত গড়ে তুলেছিলেন। 

পাক মদতপুষ্ট হানাদাররা কাশ্মীর রাজ্যে প্রবেশ করে দখলদারি চালালে মহারাজা হরি সিং ভারতের কাছে সামরিক সাহায্য প্রাথর্না করে, কিন্তু ভারত সরকার হরি সিং-কে এই শর্ত দেয় যে কাশ্মীর যদি ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করে তবেই ভারত সাহায্য পাঠাবে এরূপ পরিস্থিতিতে 1947 খ্রী: 26 শে অক্টোবর মহারাজা হরি সিং সরকারিভাবে ভারত ইউনিয়নের সঙ্গে যোগদান করে। 



Ratings
No reviews yet, be the first one to review the product.
Click to send whatsapp message
Copywrite 2025 LRNR