CHAPTER-4 BOCHON || চতুর্থ অধ্যায় বচন

১. নীচের অনুচ্ছেদগুলিকে নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দগুলিতে কোন কোন বচনের ব্যবহার হয়েছে, তা নির্ণয় করো :

১.১. আজ থেকে ঠিক বাহান্ন বছর আগে মা -বাবা-ভাই -বোন আত্মীয় -বন্ধু ও ঘর -বাড়ি ছেড়ে আরামহীন অনিশ্চিতের পথে বেরিয়ে পড়েছিলাম অজানাকে জানার ও অচেনাকে চেনার জন্য। সারা পৃথিবী ঘোরবার স্বপ্ন যা ছেলেবেলায় ভূগোল পড়বার সঙ্গে সঙ্গে নেশার মতো আমাকে আঁকড়ে ধরেছিল, ১৯২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর, তার বাস্তবরূপ নেওয়ার পথের প্রথম পদক্ষেপ শুরু হলো। আমার বয়স তখন তেইশ, সঙ্গে তিন বন্ধু -অশোক মুখার্জি, আনন্দ মুখার্জি ও মনীন্দ্র ঘোষ। অশোক মুখার্জি আমাদের দলের নেতা।  সাইকেল চারখানা আমাদের বাহন। 

উঃ - ঘর-বাড়ি - বহুবচন 

পৃথিবী - একবচন 

আমাকে - একবচন 

তেইশ - বহুবচন 

আমার - একবচন 

আমাদের - বহুবচন 

১.২. যাত্রা শুরু হলো সেই নির্দিষ্ট দেশের দিকে।  কিছু দূরে যেতে না যেতে নানা প্রকারের বাধা আসতে লাগল।  ক্রমশ তাঁরা এগোতে লাগলেন। যেখান দিয়ে যান সেখানে এক এক জায়গায় তাঁবু ফেলে খাবার রেখে যান এবং প্রত্যেক তাঁবুর উপর একটা করে পতাকা গুঁজে রাখেন। কারণ ফেরবার সময় যখন খাবার দরকার হবে তখন এই সমস্ত তাঁবু থেকেই তা পাওয়া যাবে এবং ফেরবার পথেরও নিশানা হবে। 

উঃ - দেশের - একবচন 

নানা - বহুবচন 

তাঁরা - বহুবচন 

তাঁবু - একবচন 

সমস্ত - বহুবচন 

১.৩. বেশ হই হই করে পথ চলছিলাম। অপরাহ্নে হঠাৎ মেঘ উঠল যেন নীল ঘাস দিয়ে বোনা পাখির বাসা। বাতাস আর বিদ্যুৎ তার মধ্যে এসে ঘোঁট পাকাতে লাগল। তারপর পুটপাট করে বৃষ্টি নামল। আমাদের পাঁচজনের তাপ্পিমারা একটামাত্র ছাতা, সেটাও হাওয়ায় দমকে উলটে গেল।  বৃষ্টি ঝেঁপে এলে পথের পাশে গাছতলায় দাঁড়াই , কমে গেলে আবার হাঁটি -এইভাবে থেমে থেমে চলতে চলতে শেষে বিরক্ত হয়ে বেপরোয়া বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে লাগলাম। মাঠে মাঠে জল দাঁড়িয়ে গেছে। ছোটো ছোটো স্রোত এসে পড়ছে খালে, দূরে দেখা যায় পাটক্ষেতের উপর বৃষ্টি ঘুর পাক খাচ্ছে, জলের ছায়া কত দূর পর্যন্ত আমাদের ঘিরে আছে। 

উঃ - পথ - একবচন 

নীলঘাস - বহুবচন 

বৃষ্টি - বহুবচন 

পাঁচজনের - বহুবচন 

মাঠে মাঠে - বহুবচন 

২. নীচের শব্দগুলির বহুবচনের রূপগুলি লেখো :

1. আমি - আমরা 

2. জন্তু -জন্তুগুলো 

3. সে - তারা 

4. টেলিভিশন - টেলিভিশনগুলি 

5. আমার - আমাদের 

6. তিনি -তারা 

7. পাঠশালা - পাঠশালাগুলি 

৩. নীচের একবচন ও বহুবচন শব্দগুলি নির্দিষ্ট স্থানে বসাও :

নৌ - সেনা, মা, তোদের, তাঁকে, মাঠ, তিমি, ধুলো, বন্ধুরা 

একবচন বহুবচন 

মা নৌ-সেনা, ধুলো, তোদের, বন্ধুরা 

তাঁকে, মাঠ, তিমি 

৪. নীচের বাক্যগুলিতে কীভুল আছে তা নির্দেশ করে বাক্য গুলি শুদ্ধ করে লেখো :

৪.১. একটি ছোট্ট ছোট্ট বইয়ের দোকান। 

ভুল 

উঃ - একটি ছোট্ট বইয়ের দোকান। 

৪.২. যতীনদের রাগ তখন কমে এসেছে, তার মনের ভয় হয়েছে। 

           ভুল         ভুল 

যতীনের রাগ তখন কমে এসেছে, তার মনে ভয় হয়েছে। 

৪.৩. সুয্যিরা ডুবে গেছে কতক্ষণ। 

  ভুল 

সূয্যি ডুবে গেছে কতক্ষণ। 

৫. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:

৫.১. বচন বলতে কী বোঝো। বাংলায় বচন কত প্রকার ও কী কী ? প্রত্যেক ক্ষেত্রে দুটি করে উদাহরণ দাও। 

যার দ্বারা বিশেষ্য ও সর্বনামের সংখ্যা প্রকাশ করা হয় , তাকে বচন বলে। 

বাংলায় বচন দু প্রকার। (১) একবচন  (২) বহুবচন 

একবচনের উদাহরণ - (১) আমি , (২) তুমি 

বহুবচনের উদাহরণ - (১) আমাদের , (২) তাহারা 

৫.২. বাংলায় একবচনকে বহুবচনে পরিণত করার তিনটি নিয়ম দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো। 

তিনটি নিয়ম হল - (১) এক বচনাত্মক পদের সঙ্গে ‘গুলো’ ‘গুলি’ ইত্যাদি বিভক্তি যোগে বহুবচন।  যেমন - বইগুলো আমার। 

(২) একবচনাত্মক পদের সঙ্গে ‘রা’ বিভক্তি যোগে বহুবচন। যেমন - শিশুরা পার্কে খেলছে। 

(৩) একবচনাত্মক পদের সঙ্গে ‘দের’ বা ‘দিগের’ যোগে বহুবচন। যেমন - ছাত্রীদিগের পড়াশোনায় মন নেই। 

৫.৩. কোন কোন ক্ষেত্রে বহুবচন হয় না, উদাহরণসহ উল্লেখ করো। 

যে যে ক্ষেত্রে বহুবচন হয় না -

(ক) স্থানবাচক শব্দের বহুবচন হয় না। 

(খ) গোনা যায় না এমন বিশেষ্য পদের বহুবচন হয় না -(১) যেমন - চিনিগুলো তুলে রাখ। 

(গ) সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের বহুবচন হয় না - যেমন - (১) রবীন্দ্রনাথ 

(ঘ) বাংলা ভাষায় বহুবচনের বহুবচন হয় না।  যেমন - সকল ছাত্রদের ডাকো।  সঠিক হল - সকল ছাত্রকে ডাকো 

৬. উদাহরণ দাও :

৬.১. সমার্থক শব্দযোগে বহুবচন। 

বাড়িতে ফিরে চিঠিপত্র লিখো। 

৬.২. সর্বনামের দ্বিত্ব প্রয়োগে বহুবচন। 

কেউ কেউ আজ সভায় গেছে। 

৬.৩. একবচনের রূপ দ্বারা বহুবচনের অর্থ। 

মানুষ মরণশীল। 

৬.৪. বহুবচনের রূপ দ্বারা একবচনের অর্থ। 

আমরা অনেকবার এ জাতীয় বই ছাপিয়েছি। 

৬.৫. সমষ্টিবাচক শব্দের যোগে বহুবচন। 

সভার সদস্যবৃন্দ উত্তেজিত হয়ে উঠেছে।